বোবায় ধরা বা স্লিপ প্যারালাইসিস কী? পরিত্রাণ পাবেন কীভাবে
ঘুমের মধ্যে কথা বলা, গোঙানো বা চিৎকার করা–হয়তো পরিচিত অনেককেই এমনটা করতে দেখেছেন বা শুনেছেন। অনেকে এ সমস্যাকে বোবায় ধরা বলে অভিহিত করেন। কিন্তু এ ধারণা কতটা সত্য?
ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। চিকিৎসাশাস্ত্রের মতে,মানুষ ঘুমের ঠিক দুই ঘণ্টা পর থেকে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।এই স্বপ্ন হতে পারে সুখের আবার কখনো দুঃখের। মূলত আমাদের সাবকনসাস মাইন্ড বা অবচেতন মন থেকে আমরা ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখি। স্বপ্ন দেখার এই সময়কে বলা হয় রেপিড আই মুভমেন্ট পিরিয়ড। ঘুমের যে সময়টায় মানুষ স্বপ্ন দেখে না, তাকে বলা হয় নন রেপিড আই মুভমেন্ট পিরিয়ড। সাধারণত এই পিরিয়ডে থাকাকালীন মানুষকে বোবায় ধরে না। মূলত মানুষ যখন স্বপ্ন দেখে তখনই বোবায় ধরার সম্ভাবনা থাকে। আসলে স্বপ্নের খারাপ মুহূর্তগুলোতে এই অদ্ভূত ঘটনা ঘটে। এ সমস্যাকে বলা হয় স্লিপ প্যারালিসিস।
এ সমস্যায় মনে হয়, কেউ যেন গলাটিপে ধরেছে, শরীরের ওপর জোর করে চেপে বসেছে কিছু। আপনি বেরোতে চাইছেন, কিন্তু পারছেন না। বহু চেষ্টা করেও হাত-পা নাড়াতে পারছেন না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্লিপ প্যারালিসিসের প্রধান কারণ হলো মাইগ্রেন ও নারকোলেপ্সি। চিকিৎসকরা এ রোগের আরও যে কারণগুলো উল্লেখ করেছেন সেগুলো হলো: চাপ-ধকল ও দুশ্চিন্তা করা, অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন, কম ঘুমের সমস্যা,লাইফ স্টাইলে হঠাৎ পরিবর্তন ইত্যাদি। বংশগতভাবেও এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এই রোগ থেকে পিছু ছাড়াতে অবশ্যই দৈনিক আট ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। ভালো বা গভীর ঘুমের জন্য পছন্দের বই বা গান শুনে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস এ ক্ষেত্রে দারুণ কাজ করবে। যতটা সম্ভব দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে। অপ্রয়োজনীয় চিন্তা পরিত্যাগ করতে হবে। অ্যালকোহল, কফি খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।
তবে দীর্ঘ সময় ধরে এ রোগে ভুগলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। ভয় না পেয়ে লাইফস্টাইলে পরিবর্তন আনতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম ও সুষম খাবার এ রোগ প্রতিরোধে ভাল নিয়ামক হিসাবে কাজ করবে।