ড্র হলো সিডনি টেস্ট
সিডনিতে ৪০৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে আজিঙ্কা রাহানের দল। শেষ দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত করতে পেরেছে ৫ উইকেটে ৩৩৪ রান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ব্যাটিংয়ের যে নিদর্শন রাখলো ভারত, সেটাও ইতিহাসের চেয়ে কম নয়। কারণ এমন ব্যাটিং নিদর্শন নিকট অতীতে আর দেখা যায়নি এই দলটির কাছ থেকে।
ভারত এই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে তারা ব্যাটিং করেছে ১৩১ ওভার! ভারত এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ১৫০.৫ ওভার ব্যাট করেছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, সেই ১৯৭৯ সালে। নিকট অতীতে ভারতের এমন বেশি ওভার খেলার রেকর্ড বলতে এই ১৯৭৯ সালেই। একই বছরে পাকিস্তানের বিপক্ষেও দিল্লিতে ১৩১ ওভার ব্যাট করেছিল ভারত। এর পরেই জায়গা করে নিয়েছে সিডনির এই টেস্ট। প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বেশি ওভার ব্যাট করার এই তালিকায় সিডনি টেস্টটি রয়েছে পাঁচে।
এমন দৃষ্টান্ত স্থাপনে শেষ দিকে বড় কৃতিত্ব রবিচন্দ্রন অশ্বিন আর হনুমা বিহারির। অস্ট্রেলিয়ার মতো আগ্রাসী বোলিং লাইন আপের সামনে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছেন দুজন। তাও প্রায় তিন ঘণ্টা! হ্যাজলউডের বলে যখন পূজারা ফিরেছেন, তখনও ওভার বাকি ছিল ৪৪টি। স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ২৭২। তখন অজিরা টেস্ট জয়েরই স্বপ্ন দেখছিল। কিন্তু অজিদের হতাশ করে বাকিটা সময় বিহারিকে নিয়েই ক্রিজে পড়েছিলেন বোলার হিসেবে পরিচিত অশ্বিন। দুজনের ধৈর্য কতখানি ছিল, সেটি তাদের ইনিংসের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে। ১৬১ বল খেলে মাত্র ২৩ রানে ক্রিজে পড়ে ছিলেন বিহারি। অশ্বিন ১২৮ বল খেলে ক্রিজে ছিলেন ৩৯ রানে!
অবশ্য শেষ দিনের শুরুটা মোটেও সুখকর ছিল না সফরকারীদের। মাত্র চতুর্থ বলে ফিরেছেন অধিনায়ক রাহানে। তবে পূজারা খেলে গেছেন নিজস্ব ভঙ্গিমায়। নতুন নামা ঋষভ পান্তকে সঙ্গে নিয়ে দিনের আলোচিত জুটিটা গড়েছেন তিনি। ২৬৫ বল খেলে ১৪৮ রানের জুটি গড়েন তারা।
পান্ত যখন সেঞ্চুরি থেকে মাত্র তিন রান দূরে, তখনই মনোযোগ হারিয়ে বিপদ ডেকে আনেন। নাথান লায়নের বলে তিনি কামিন্সকে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে ভেঙে যায় সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। কিছুক্ষণ পর ৭৭ রানে ব্যাট করতে থাকা পূজারাকে ফিরিয়ে অজিরা মনে করেছিল ভারত বুঝি কোণঠাসা হয়ে গেছে! কিন্তু শেষভাগে অবিশ্বাস্য প্রতিরোধে স্বাগতিকদের ব্যাট হাতে জবাব দিয়েছেন অশ্বিন-বিহারি।
এই টেস্ট ড্র হওয়ায় সিরিজ এখনও ১-১ সমতায় থাকলো। ম্যাচসেরা হয়েছেন স্টিভেন স্মিথ।