নাসার ‘চন্দ্রযান’ ওরিয়ন স্থাপন করা হল চাঁদের কক্ষপথে
নাসার “চন্দ্রযান” ওরিয়ন সফলভাবে চন্দ্রের কক্ষপথে প্রবেশ করেছে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার প্রতিনিধিরা শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) একটি বিবৃতি জারি করে বলেছে যে কক্ষপথে প্রবেশ করার পর, ওরিয়ন চাঁদ থেকে প্রায় ৪০,০০০ মাইল দূরে অবস্থান করছে। আগামী সপ্তাহে চাঁদের কক্ষপথের অর্ধেক প্রদক্ষিণ করবে নাসার ‘লুনারশিপ’।
এই সপ্তাহের শুরুতে, নাসার আর্টেমিস-১ মহাকাশযান চন্দ্র কক্ষপথে পৌঁছেছে। কিন্তু ধীরে ধীরে এটিকে ধীর গতির করা এবং কক্ষপথে স্থাপন করাই ছিল নাসার বিজ্ঞানীদের প্রধান চ্যালেঞ্জ।তবে এই পর্বটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এরপর ‘চন্দ্রযান’ ওরিয়ন চাঁদে গিয়ে কিছু ছবি পাঠায়।
প্রসঙ্গত, কক্ষপথে প্রবেশের আগে এটি ধীর না হলে যেমন এটি চাঁদকে অতিক্রম করে সৌরজগতের সবচেয়ে দূরবর্তী স্থানে পৌঁছে যেতে পারত, তেমনি ওরিয়ন তার গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে চন্দ্রপৃষ্ঠে বিধ্বস্ত হতেও পারত।
যাইহোক, আর্টেমিস-১ সফলভাবে ১৬ই নভেম্বর উৎক্ষেপিত হয়েছিল। আর্টেমিস মিশনের মাধ্যমে আবারও চাঁদে মানুষকে অবতরণ করার পরিকল্পনা করছে নাসা। তিন ধাপে কাজটি সম্পন্ন করা হবে। মনুষ্যবিহীন মহাকাশযান “ওরিয়ন” এর প্রথম ধাপ আর্টেমিস-১ দিয়ে চাঁদে পাড়ি জমিয়েছে। মিশনের মূল লক্ষ্য চাঁদে অবতরণের জন্য সম্ভাব্য “ল্যান্ডিং সাইট” চিহ্নিত করা।
আর্টেমিস-১ মূলত ২৯ আগস্ট লঞ্চের কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে রকেটের তরল হাইড্রোজেন পাইপলাইনে একটি ছিদ্র শনাক্ত করা হয়। কাউন্টডাউন শুরু হলেও কিছুক্ষণ পর থামিয়ে দেয়া হয়। প্রকৌশলীরা ছুটে আসেন। কিন্তু বহু চেষ্টার পরও সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয় না। ফলে মিশনটি সেদিনের জন্য বাতিল করা হয়।
লঞ্চের দ্বিতীয় দিন ২রা সেপ্টেম্বর নির্ধারিত হয়। কিন্তু এবার তরল হাইড্রোজেন ট্যাঙ্কে লিকেজ ধরা পড়ে। ফলস্বরূপ, স্পেস লঞ্চ সিস্টেম রকেটের মিশন আবার বাতিল করা হয়। যদিও ওরিয়ন মহাকাশযানটিকে একটি বিকল্প হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল, নাসার বিজ্ঞানীরা শেষ পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী স্পেস লঞ্চ সিস্টেম রকেটের উপর নির্ভর করেছিলেন।
১৯৬৯ সালে, নাসার মহাকাশচারী নীল আর্মস্ট্রং এবং এডউইন অলড্রিন ‘অ্যাপোলো-১১’ মিশনের সময় চাঁদে প্রথম অবতরণ করেন। ১৯৭২ সালে, নাসার ‘অ্যাপোলো-১৭’ মহাকাশচারী জেন সারনানকে নিয়ে চাঁদে অবতরণ করেছিল। সেই ঘটনার অর্ধ শতাব্দী পর নাসা আবার চাঁদে মহাকাশচারী পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। একই সময়ে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা চাঁদে একটি দীর্ঘমেয়াদী গবেষণা অবকাঠামো স্থাপনের পরিকল্পনাও করছে।