নীল আকাশ
সূর্যের উত্তাপ যখন কম থাকে তখন খোলা আকাশের দিকে তাকাতে কার না ভালো লাগে! সুবিশাল সুনীল আকাশের প্রেমে পড়েনি এমন মানুষ পাওয়াও দুষ্কর। নীলিমার আলোকছটা বা নীলের আভা, এ যেন মনকে প্রশান্তিতে ভরিয়ে দেয়। তবে কেউ কেউ আবার এ নীলকে বেদনার উপমা হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। প্রশান্তি কিংবা বেদনা সে যাই হোক, এত রং থাকতে আকাশের রং নীল কেন? অন্যকিছুও তো হতে পারতো। এ প্রশ্ন হয়তো অনেকের মনেই জাগে?
সহজ কথায় বললে, আকাশ হচ্ছে একটি বায়ুমণ্ডল। বিভিন্ন ধরনের গ্যাস ও জলীয় বাষ্প দিয়ে যা তৈরি। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে এটা চারপাশ থেকে পৃথিবীকে ঘিরে আছে। পৃথিবী ছেড়ে যত উপরে যাবে, বায়ুমণ্ডল ততই হালকা হতে থাকবে এবং ধীরে ধীরে তা আর থাকবেও না। এ জন্য মহাশূন্যে কোনো বায়ুমণ্ডল নেই।
এবার জানতে হবে সূর্যের আলোর কথা। সূর্যের আলোর রঙ দেখতে সোনালি হলেও, রংধনুর সাতটা রঙের মিশ্রণ এটি। এই আলোতে রংধনুর সাতটি রঙই আছে। প্রিজম নামে এক প্রকারের বিশেষ আকৃতিতে তৈরি ক্রিস্টাল রয়েছে। আর এই প্রিজমটি সূর্যের আলোয় যদি কখনো ধরা হয়, তাহলে দেখা যাবে আলোটা বেগুনি, নীল, আকাশি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল এ সাতটা রঙে ভাগ হয়ে গেছে। আগেই বলেছি সূর্যের আলোতে থাকে বেনীআসহকলা বা রংধনুর সবকটি রঙ।
এ ছাড়া আকাশের যে নীল রং, তা মূলত সূর্যের আলোর নীল রঙ। অন্যান্য রঙের তুলনায় নীল রঙ ক্ষুদ্রতর তরঙ্গের মাধ্যমে ছড়াতে পারে, সেজন্য এ রঙটা বায়ুমণ্ডলে সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়ে। যেহেতু বায়ুমণ্ডলটাই আকাশ, তাই সেখানে যেই রঙ ছড়াবে, আকাশের রঙ সেটাই হবে। তাই সূর্যের নীল রঙটা বায়ুমণ্ডলে পড়ার কারণে তা নীলাভ রঙ ধারণ করে। ফলে আকাশটাও নীল দেখায়। আর এ জন্যই আকাশের রঙ নীল হয়; লাল, হলুদ বা অন্যকোনো রঙ হয় না।