জাকাতই পারে করোনায় গরিবদের কষ্ট লাঘব করতে

সাত দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে গতকাল। আগের ১০ দিনও বেশ কিছু বিধিনিষেধ ছিল, যাকে ঠিক লকডাউন বলা যাবে না। আয়-রোজগার নিয়ে প্রান্তিক মানুষের কষ্ট কিন্তু শুরু হয়েছে তখনই, কঠোর লকডাউনে সে কষ্ট আরও বাড়বে। আর আট দিনের লকডাউনে পরিস্থিতির উন্নতি হবে কি না, এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে দ্বিমত আছে। মেয়াদ যদি বাড়ে, এ মানুষগুলো কিন্তু প্রকৃতই বিপদে পড়বেন।

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মুবিনুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, “কিছু জায়গায় সমস্যা হয়েছে, আমাদের কানে পৌঁছানো মাত্রই সুরাহা করার চেষ্টা করছি।“  জরুরি সেবায় নিয়োজিত যাঁরা, তাঁদের চলাচল লকডাউনের আওতামুক্ত বলেও জানান তিনি। চিকিৎসকদের গাড়িচালকেরাও আওতামুক্ত কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “গাড়িচালকদের মুভমেন্ট পাস নিতে হবে।“

কোভিড পরিস্থিতির অতিরিক্ত কাজের কারণে ডিএমপির কর্মকর্তারা যথেষ্ট চাপে আছেন—এটা অনুধাবন করা যায়। কোনো অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করতে গেলে কাজ বাড়ে, চাপও বাড়ে। অতিরিক্ত কমিশনার বলেছেন, গাড়িচালকদের মুভমেন্ট পাস লাগবে। মুভমেন্ট পাসের মেয়াদ তিন ঘণ্টা। অর্থাৎ একজন ডাক্তারের গাড়িচালক তাঁকে কাজে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি এবং আট ঘণ্টা পর ফেরত নিয়ে আসার জন্য আরেকটি মুভমেন্ট পাস জোগাড় করবেন।

ইসলাম ধর্মের যেসব স্তম্ভ আছে, তার মধ্যে অনিন্দ্য সুন্দর হচ্ছে জাকাত। বছর শেষে স্থাবর সম্পদ ছাড়া যা কিছু উদ্বৃত্ত, তার শতকরা আড়াই ভাগ দরিদ্রদের দান করে দিতে হবে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এ কাজ সাধারণত রমজান মাসে করেন। অনেকে অবশ্য নিজ নিজ মতে এর ব্যাখ্যা করে ফেলেন।

বিশাল সম্পদের মালিক, এমন অনেকেই দৃশ্যমানভাবেই প্রচণ্ড ধার্মিক। তাঁরা নিশ্চয় জাকাত দেন। উদ্বৃত্ত সম্পদের হিসাবটা তাঁরা কোন পদ্ধতিতে করেন? তাঁদের একজনের মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর বাজারমূল্যে এক হাজার কোটি টাকার শেয়ার যদি থাকে, দ্বিতীয় পদ্ধতিতে তাঁর জাকাত কিন্তু দাঁড়াবে শুধু ওই সূত্রেই ২৫ কোটি টাকা! লকডাউনের এই রমজানে, প্রান্তিক মানুষের দুর্দশা লাঘবে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে পারে বিপুল বিত্তশালীদের সঠিক হিসাবের জাকাত।