অনলাইনে জুয়ার আসর

অনলাইনে চলা ক্যাসিনো জুয়ার আগ্রাসনের রাশ এখনো টানা যায়নি। জুয়াড়িদের অনলাইনে সক্রিয় করা হচ্ছে গেমিং, বেটিং বা বাজি খেলার সাইটের নামে। সেখানে ক্যাসিনো খেলার মতোই বিটকয়েন বা ডিজিটাল মুদ্রার (ক্রিপ্টোকারেন্সি) মাধ্যমে জুয়া খেলা হয়। প্রায় ২০০ জুয়ার ক্ষেত্র শনাক্ত করে সেই সব ওয়েবসাইট লিংক বন্ধ করার পরও বেড়েই চলেছে অনলাইন ক্যাসিনো। অর্ধশতাধিক কারবারিকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব ও পুলিশের গোয়েন্দারা অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন।

ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহার করে চালানো হচ্ছে জুয়ার অ্যাপ। অনুমোদনহীন গেটওয়ের মাধ্যমে বন্ধ হওয়া সাইট বা নতুন সাইট ব্রাউজ করে জুয়া খেলা চলছে। অনলাইন ক্যাসিনোর সাইটগুলোর ডোমেইন দেশের বাইরে। অবৈধ প্রক্রিয়ায় এই ডিজিটাল মুদ্রা কেনাবেচার লেনদেনে শত শত কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে দেশের বাইরে। দেশের বাইরে থাকা মূল হোতাদের সঙ্গে দেশীয় এজেন্টরা মিলে এ অপরাধমূলক কাজ করছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবের ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র‌্যাব। ওই দিন রাতেই একে একে ওয়ান্ডার্স ক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা চিত্তবিনোদন ক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র, গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ ক্লাবে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ক্যাসিনোর খোঁজ মেলে। ধারাবাহিক অভিযানের সূত্র ধরে ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট থেকে নামিয়ে আনা হয় অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধানকে। র‌্যাবের নজরদারিতে সে সময় জানা যায়, কমপক্ষে ১৫টি চক্র ১৫০টি সাইট থেকে অনলাইন ক্যাসিনোর কারবার করছিল।

তদন্তকারীরা জানান,  ইউরোপিয়ান ফুটবল লিগ ও আইপিএল ক্রিকেট নিয়ে এখন বেশি বেটিং চলে। ‘বেট ৩৬৫ লাইভ’ নামে এসেছে মোবাইল ফোনের অ্যাপস ভার্সন, যেখানে আইপিএল নিয়ে দেদার চলে জুয়া। এমন কিছু সাইটের ব্যাপারে তথ্য থাকার পরও কিছু সীমাবদ্ধতার জন্য অনলাইন ক্যাসিনো বন্ধে হিমশিম খাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। প্রশাসনের চোখ এড়াতে ক্লাবের ক্যাসিনো বাদ দিয়ে অনলাইন ক্যাসিনোতে মনোযোগ দিয়েছে কিছু চক্র।

ভিপিএনসহ কিছু অনুমোদনহীন গেটওয়ের মাধ্যমে বন্ধ হওয়া সাইট বা নতুন সাইট ব্রাউজ করে জুয়া খেলা হয়। সাইটগুলোর ডোমেইন দেশের বাইরে এবং নির্ধারিত সময় পর পর সাইটের আইপি ঠিকানা পরিবর্তন করে নিয়ন্ত্রণকারীরা। বিট কয়েনে লোকসানের কোনো রেকর্ড থাকে না। ফলে কালো টাকার মালিকরা দেদার পাচার করছে টাকা।