করোনায় অন্ধ হতে হচ্ছে রোগীদের

করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ভারতের মুম্বাইয়ের ২৫ বছরের এক নারীর চোখ অস্ত্রোপচার করার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কোভিড থেকে সুস্থ হতে না হতেই  মিউকরমাইকোসিস বিপজ্জনক ছত্রাক সংক্রমণে আক্রান্ত হোন। ছত্রাকটি  ব্ল্যাক ফাঙ্গাস  নামেও পরিচিত।

ডা. নায়ের ওই নারীর চোখ তুলে ফেলতে তিন ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, জীবন বাঁচাতে ওই নারীর চোখ ফেলে দিতে হবে। এ ছাড়া এই পর্যায়ে এই রোগের আর কার্যকর চিকিৎসা নেই। নাকে একটি টিউব ঢুকিয়ে মিউকরমাইকোসিস সংক্রমিত টিস্যুগুলো বের করে আনেন। বিপর্যস্ত ভারতের চিকিৎসকেরা এখন আরও অনেকের ক্ষেত্রে বিরল এই সংক্রমণের খবর দিচ্ছেন।

এই ছত্রাক সাইনাস, মস্তিষ্ক ও ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। ডায়াবেটিসের রোগী এবং ক্যানসার ও এইডসে আক্রান্তদের মতো যাঁদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা খুবই কম, তাঁদের ক্ষেত্রে এটা প্রাণহানির ঝুঁকি তৈরি করে। মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্তদের মৃত্যুহার ৫০ শতাংশের মতো। মিউকরমাইকোসিস একটি বিরল সংক্রমণ। মিউকর নামে একটি ছত্রাকের সংস্পর্শে এলে এই সংক্রমণ হয়। সাধারণত মাটি, গাছপালা, পচনশীল ফল ও শাকসবজিতে এই ছত্রাক দেখা যায়। ডা. নায়ের বলেন, এই ছত্রাক সব জায়গায় থাকে।

কোভিড-১৯–এ আক্রান্তদের ফুসফুসের প্রদাহ কমায় স্টেরয়েড। তা ছাড়া করোনাভাইরাসকে নিরস্ত করতে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার যে বাড়তি তৎপরতা চালাতে হয়, তাতে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এটা সাহায্য করে বলে ধারণা করা হয়। চিকিৎসকদের ধারণা, করোনায় গুরুতর অসুস্থদের চিকিৎসায় যেসব স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়, সেগুলোর কারণে মিউকরমাইকোসিস সংক্রমণ ঘটতে পারে।

মুম্বাইয়ের সিয়ন হাসপাতালে গত দুই মাসে এই ছত্রাকে সংক্রমিত ২৪ জন রোগী এসেছেন। হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের প্রধান রেনুকা ব্র্যাদু জানান, আগে বছরে এ ধরনের রোগী আসত মাত্র ছয়জন। চিকিৎসকেরা বলছেন, অধিকাংশ রোগীই তাঁদের কাছে দেরিতে আসছেন, যখন তাঁরা দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলছেন। সে কারণে ছত্রাকটি মস্তিষ্কে যাওয়া ঠেকাতে অস্ত্রোপচার করে চোখ ফেলে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকছে না।