শরীরের গোপন তথ্য জানাবে যে ডিভাইস
জাপানের গবেষকেরা সম্প্রতি অত্যন্ত হালকা-পাতলা ই-স্কিন তৈরি করেছেন, যা ওয়াটার স্প্রে ব্যবহার করে বুকের কাছে লাগিয়ে রাখা যাবে। এই ই-স্কিন এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পরিধান করা যাবে। গবেষকেরা বলছেন, ই-স্কিন শরীরে লাগিয়ে রাখা যাবে সহজেই। এতে হৃৎস্পন্দন, ডায়াবেটিসসহ নানা তথ্য দূরে বসেই পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন চিকিৎসকেরা।
টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক টাকাও সমেয়া এই প্রযুক্তির উদ্ভাবক। সিএনএন বলছে, এই ই-স্কিন অনুমোদন পেতে অবশ্য ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাতে হবে। তবে সমেয়া বলেছেন, তিনি এর সফলতা নিয়ে আশাবাদী। ই-স্কিন তৈরির ক্ষেত্রে তিনি সহযোগীদের সঙ্গে কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
ই-স্কিন মূলত পরিধানযোগ্য সেন্সর, যা হৃৎস্পন্দন ও মাংসপেশি নড়াচড়ার বৈদ্যুতিক সংকেত ধরতে পারে। ছোট্ট একটি তারহীন ট্রান্সমিটার বুকের কাছে বাঁধা থাকে, যা হৃৎস্পন্দনের তথ্য নিকটস্থ স্মার্টফোন বা ল্যাপটপে বা ক্লাউডে পাঠায়। এতে অনেক দূরে বসেও চিকিৎসক সে তথ্য পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
সাম্প্রতিক ই-স্কিন নকশা করা হয়েছে মূলত জাপানের দ্রুত বেড়ে যাওয়া বয়স্ক জনগণের কথা মাথায় রেখে। গবেষক সোমেয়া বলেন, দূরে বসে কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে বয়স্ক ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যের বিষয়টি নিখুঁতভাবে দীর্ঘ সময় ধরে পর্যবেক্ষণের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। ই-স্কিন টেকসই বলে এটি বিভিন্ন ক্রনিক রোগ, যেমন ডায়াবেটিস, হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধের মতো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা যায়। এ ছাড়া এটি অসুস্থতার প্রাথমিক লক্ষণগুলো শনাক্ত করতে সাহায্য করে।
ই-স্কিনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের বিভিন্ন ধরনের তথ্য পর্যবেক্ষণ করা। তা যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ছাড়াই করা যেতে পারে। এ প্রযুক্তি শরীরের নড়াচড়া পর্যবেক্ষণ করে সে তথ্য ল্যাপটপে পাঠায়। বিশেষ সফটওয়্যার সেই তথ্য দৃশ্যমান করে তোলে। সোমেয়া বলেন, শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নড়াচড়া পর্যবেক্ষণে সাধারণত একাধিক ক্যামেরার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু ই-স্কিন ব্যবহারে তার আর প্রয়োজন নেই।
স্টার্টআপ জেনোমা তাদের তৈরি পাজামায় ই-স্কিন ব্যবহার করেছে, যা বিছানায় তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করতে পারে। এ ছাড়া স্পোর্টসওয়্যারে ফিটনেস মনিটরিংয়ের জন্য ই-স্কিন ব্যবহার করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এই স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানটি তাইকোয়ান্দো প্রশিক্ষক মানা উমেহারার সঙ্গে যৌথভাবে ই-স্কিনযুক্ত পোশাক তৈরি করেছে, যা অ্যাথলেটদের পারফরম্যান্স বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারে।