৩০০ কর্মকর্তা নিতে চায় ইসি নির্বাচনের বছরে
চলতি বছরের শেষ বা আগামী বছরের শুরুতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা সংবিধান অনুযায়ী। ৩০০ কর্মকর্তা নিতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) এই নির্বাচনের বছরে নির্বাচনী বিভিন্ন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে। চলমান একটি বিসিএসের নন–ক্যাডার নিয়োগ দেওয়ার সময়ই যাতে এই কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া যায়, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) যোগাযোগ করা হয়েছে।
নন–ক্যাডার থেকে ৩০০ কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে চায় নির্বাচন কমিশন। সে জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে শূন্য পদের তালিকাও পিএসসিতে এসেছে। নির্বাচন কমিশন কিছুটা দ্রুত এই ৩০০ কর্মকর্তা নিতে চাচ্ছে। ৪০তম বিসিএস থেকেই যাতে এই কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়, সে জন্য পিএসসিকে অনুরোধ করেছে।
এখন এই নিয়োগ নির্ভর করছে নন–ক্যাডার বিধিমালা অনুমোদনের ওপর। ওই বিধির অনুমোদন দেবেন প্রধানমন্ত্রী। তাহলে নন–ক্যাডারের তালিকায় এই ৩০০ জনের নিয়োগের বিষয়টি যুক্ত করা যেতে পারে।
নন–ক্যাডার নিয়োগের সংশোধিত বিধিটি এখন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে তাঁর অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি এই বিধি অনুমোদন দিলেই ৪০তম বিসিএসে নন–ক্যাডারের তালিকায় থাকা চাকরিপ্রার্থীদের চাকরির সুপারিশ করবে পিএসসি। পিএসসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসি সূত্র জানায়, নন–ক্যাডারের বিধি সংশোধন করার ফাইলটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। এ ধরনের ফাইলে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন প্রয়োজন। তিনি অনুমোদন দিলেই পিএসসি দ্রুত সময়ে নিয়োগের সুপারিশ করতে পারবে। এই অনুমোদন হলে মেধা ও যোগ্যতা অনুসরণ করে নন–ক্যাডারদের নিয়োগ দিতে পারবে।
৪০তম বিসিএসে নন–ক্যাডারদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য তাঁদের সব প্রস্তুতি নেওয়া শেষ। এ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দফায় দফায় বসে কীভাবে নিয়োগ সম্পন্ন হবে, তা ঠিকও করে ফেলেছেন। ৪০তম বিসিএসের নন–ক্যাডারে থাকা প্রার্থীদের যাতে বেশি দিন অপেক্ষা করতে না হয়, সে জন্য তাঁরা এসব প্রস্তুতি আগেই নিয়ে রেখেছেন। বিধি সংশোধন হওয়ার আদেশ হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় করণীয় ঠিক করতে চাকরিপ্রার্থীদের প্রতি নোটিশ জারি করবেন। ওই সূত্র আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন দেশের বাইরে ছিলেন। এখন তিনি ফিরেছেন। শিগগিরই এ বিষয়ে ইতিবাচক কিছুর আশা করছে তাঁরা।
নন–ক্যাডারের সংশোধিত যে বিদ্যমান বিধিটি রয়েছে, তা সংশোধনের উদ্যোগ নেয় সরকার। এরপর প্রস্তাবিত বিধিটি সচিব কমিটিতেও পাস হয়। এটির বিষয়ে পিএসসিকে মতামত দেওয়ার কাজও শেষ। এখন প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলেই নন–ক্যাডার নিয়োগে আর কোনো বাধা থাকবে না।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিসিএস থেকে নন–ক্যাডার নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০১০ সালের বিধি ২০১৪ সালে সংশোধন করা হয়েছে। বিধিতে বলা আছে, বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাডারের পাশাপাশি নন–ক্যাডার শূন্য পদের বিবরণ ও সংখ্যা উল্লেখ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু ২৮তম থেকে ৪৪তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে নন–ক্যাডার শূন্য পদের বিবরণ ও সংখ্যা উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি। এ জন্য সরকার বিধি সংশোধন করে ৩৪তম বিসিএস পর্যন্ত নন–ক্যাডার নিয়োগের বৈধতা দিয়েছিল। এখন একইভাবে ৩৫তম থেকে ৪৪তম বিসিএসের নন–ক্যাডার নিয়োগের বৈধতা দেওয়ার চিন্তা করছে সরকার। সে জন্য বিধি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর নন–ক্যাডার বিধি সচিব কমিটি পাস করেছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পরে এটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা হবে।