দক্ষিণ কোরিয়াকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল

974 স্টেডিয়াম বিশ্বের সেরা আক্রমণের একটি দর্শনীয় প্রদর্শনে অভিভূত হয়েছে। পর্তুগালকে হারিয়ে বিশ্বকে চমকে দেওয়া দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল। নেইমার-রিচার্লিসনরা সন ইয়ং-মিনদের ৪-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে নিজের জায়গা নিশ্চিত করেছে।

যদিও খেলার চূড়ান্ত বাঁশি বাজতে নব্বই মিনিট অপেক্ষা করতে হয়েছিল, ব্রাজিলের কোয়ার্টার ফাইনাল মূলত নির্ধারিত হয়েছিল প্রথমার্ধের ৩৫ মিনিটে। নেইমার চোট কাটিয়ে ফেরার পর ফুটবল বিশ্ব দেখেছে চেনা ব্রাজিলকে।

ভিনিসিয়াস-রাফিনিয়া-রিচার্লিসন কিছু সূক্ষ্ম ফুটবল কৌশল দিয়ে খেলা শুরু করেছিলেন। একের পর এক গোলের দেখা মিলতে থাকে। দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাঁচ গোল করেছিল ব্রাজিল। জুনের সেই ম্যাচটা যেখানে শেষ করেছিল ব্রাজিল, আজ যেন সেখান থেকেই শুরু করল।

এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপে প্রথমার্ধে চার গোল করল ব্রাজিল। ১৯৫৪ সালে মেক্সিকোর বিপক্ষে তারা প্রথমবারের মতো এটি করেছিল। তবে প্রথমার্ধে ৪ গোল করার পর দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়াতে পারেনি ব্রাজিল। ইনজুরির কারণে দ্বিতীয়ার্ধে কোনো সুযোগ নিতে চাননি ব্রাজিল বস তিতে। তিনি একে একে সেরা তারকাদের উঠিয়ে নেন।

অন্যদিকে, প্রথমার্ধে ছন্নছাড়া থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে অনেকবার আক্রমণ করেছে উৎসুক দক্ষিণ কোরিয়ার দল। বিশ্বের সেরা গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকারের দুর্ভেদ্য প্রাচীর ভেদও করেছিল তারা একবার। কিন্তু তা ভাগ্য উল্টানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না।

সোমবার (৫ নভেম্বর) 974 স্টেডিয়ামে খেলার ৭ম মিনিটে রাফিনহার দুর্দান্ত পাসে ভিনিসিয়াস সহজেই বল জালে জড়ান। প্রায় সাত মাস পর আন্তর্জাতিক কোন ম্যাচে গোল করলেন রিয়াল মাদ্রিদের এই স্ট্রাইকার।

ব্রাজিল তাদের লিড দ্বিগুণ করতে বেশি সময় নেয়নি, সন হিয়ং-মিনরা শুরু থেকেই আগোছালোভাবে খেলেছিল। এগারোতম মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়ার ডিফেন্ডার রিচার্লিসনকে ফাউল করেন নিজেদের ডেঞ্জার জোনে। ফলে পেনাল্টি দেওয়া হয় ব্রাজিলকে।

নেইমারের নির্মম পেনাল্টি কিক ঠেকাতে ব্যর্থ হন দক্ষিণ কোরিয়ার গোলরক্ষক কিম সিয়াং-গুই। ব্রাজিল ২-০ এগিয়ে যায়। ইনজুরি কাটিয়ে ফিরেই গোল করলেন নেইমার।

গ্রুপ পর্বে ব্রাজিলের উদ্বোধনী ম্যাচে রিচার্লিসনের দুই গোলে জয় পেয়েছিল ব্রাজিল। তিনি তার শেষ ১৬ ম্যাচে আবারও চিত্তাকর্ষক পার্ফম্যান্স দেখিয়েছেন। তিনি ২৯তম মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়ার ডিফেন্স ভেদ করে দুর্দান্ত এক গোলে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন ব্রাজিলকে।

মাত্র ৩৫ মিনিটে এক হালি গোল পূর্ণ করে ব্রাজিল। দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে চতুর্থ গোলটি করেন লুকাস পাকেতা। পাল্টা আক্রমণে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি এবং চমৎকার ফুটবল দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার জালে চতুর্থ গোলটি করেন তিনি।

শেষ পর্যন্ত ৪-১ স্কোর নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল দল। আরেকটি রূপকথা হলো না দক্ষিণ কোরিয়ার। এদিকে একই রাতে এশিয়ার দুই দেশ বিশ্বকাপ থেকে বাদ পরল। রাতের প্রথম ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে নিজেদের স্বপ্নভঙ্গ করেছে জাপান। এবার ব্রাজিলের বিপক্ষে দাড়াতেই পারল না না সন ইয়ং-মিনের দক্ষিণ কোরিয়া।