ত্বকের ব্রণ দূর করার কার্যকরী চিকিৎসা

ব্রণ একটি সাধারণ কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ত্বকের রোগ।খাদ্যাভ্যাস, লাইফস্টাইল, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ বিভিন্ন কারণে ব্রণ হয়।আমাদের ত্বকের তৈলগ্রন্থি ব্যাটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হলে এর আকৃতি বৃদ্ধি পায় তখন এর ভিতরে পুঁজ জমা হতে থাকে, যা ধীরে ধীরে ব্রণ পরিবর্তন করে ব্রণের আকার ধারণ করে।

ত্বকের খুব সাধারণ এই সমস্যা দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে। বাজারের দামি কসমেটিক্স এর পরিবর্তে ব্যবহার করতে পারেন কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি যা সহজেই আপনার ব্রণ কমাতে সাহায্য করবে।

সাধারণত বয়ঃসন্ধিতে যখন শরীরে অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের অতিবৃদ্ধি ঘটে, তখন ত্বকের সেবাসিয়াম গ্ল্যান্ড সেবাম তৈরি বাড়িয়ে দেয়। ত্বকে অতিরিক্ত লিপিড বা তেলতেলে ভাবের ফলে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। আর লিপিড হচ্ছে সেবামের একটি উপাদান যা সেবামের একটি উপাদান ফলে জীবাণু বংশবৃদ্ধি করে ত্বকে ব্যাপক মাত্রায় প্রদাহের সৃষ্টি করে।

ত্বকের অযত্ন ও অবহেলা, হরমোনজনিত পরিবর্তন, অতিরিক্ত জাংক ফুড খাওয়া, রাত জাগা, চা-কফি বেশি পান, ঘুম কম হওয়া, নিজস্ব তোয়ালে, গামছা ও চিরুনি ব্যবহার না করা, টেনশন বা দুশ্চিন্তা ইত্যাদি

কারণেও ত্বকে ব্রণ হতে পারে। ব্রণের সমস্যা দূর করার সহজ  উপায় যা সহজেই আপনার ব্রণ কমাতে সাহায্য করবে।

ব্রণ রোধে যা যা  করণীয়

  • সব সময় বাইরে থেকে আসা মাত্র মুখ ফেইস ওয়াশ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া হালকা গরম পানির স্টীম নিতে পারেন। এতেকরে ত্বকে জমে থাকা ধূলোবালি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
  • দিনে দু-তিনবার হালকা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। মুখে পানির ঝাপটা দিন।
  • সব সময় ত্বক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। নিজের জন্য আলাদা তোয়ালে, চিরুনি রাখুন ।
  • মাথা খুশকিমুক্ত রাখার চেষ্টা করুন।
  • রাতে পর্যাপ্ত ঘুমান। অপ্রয়োজনে রাত জেগে অনলাইনে থেকে ঘুম নষ্ট করবেন না।
  • প্রতিদিন রাতের খাবারের পর যেকোনও ধরনের মৌসুমি ফল খান। এটি আপনার ত্বককে সতেজ রাখবে। যতটা সম্ভব তেলযুক্ত বা ফাষ্ট ফুড জাতীয় খাবার পরিহার করুন।
  • দুশ্চিন্তামুক্ত থাকুন, মানসিক চাপ পরিহার করুন।
  • ফলমূল, শাকসবজি বেশি খান ও প্রতিদিন ৯-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে তা দূর করুন। পেঁপে, ইসবগুলের শরবত খান।
  • আমাদের মধ্যে অনেকেরই নখ দিয়ে ব্রণ খোটার বাজে অভ্যাস রয়েছে।আমাদের বুঝতে হবে এটা কোন সমাধান না। উল্টো এতে ব্রণের অবস্থা আরও খারাপ হবে। এর ফলে ব্রণ লাল হয়ে যাবে। এমনকি তা ফেটে গিয়ে মুখে দাগের সৃষ্টি করবে। ব্রণ না যাওয়া পর্যন্ত মেক-আপ ব্যবহার না করাই উচিত। দিনে অন্তত দুই বার তেল-মুক্ত ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে।
  • তেলযুক্ত ক্রিম বা ফেয়ারনেস ক্রিম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। তেলযুক্ত মেকআপ ব্যবহার করবেন না। রোদে বের হবেন না, অতিরিক্ত রোদ, অতিরিক্ত শুষ্ক আবহাওয়া এড়িয়ে চলুন। ব্রণে হাত ও নখ লাগাবেন না, খুঁটবেন না।

ব্রণের চিকিৎসা

তবে ব্রণ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে। দ্রত চিকিৎসা না করলে অনেক সময় ব্রণ থেকে ত্বকে গর্তের সৃষ্টি হতে পারে এবং ত্বকে দাগ সৃস্টি হতে পারে। আর তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ, হরমোনজনিত ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা, কেমিক্যাল পিলিংসহ নানাভাবে ব্রণের আধুনিক চিকিৎসা ও সমাধান সম্ভব।

জাহেদ পারভেজ, সহকারী অধ্যাপক, চর্ম ও যৌন বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ