প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে গ্রেপ্তার
ইথিওপিয়ার প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী মেলস জিনাউইয়ের মেয়ে সেমাহাল মেলস গ্রেপ্তার হয়েছেন। মেলস জিনাউইয়ের স্ত্রী আজেব মেসফিন বিষয়টি জানালেও দেশটির কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। মেলস জিনাউই ১৯৯১ সাল থেকে মৃত্যুর আগপর্যন্ত (২০১২ সাল) দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
ইথিওপিয়ার ফেডারেল সেনাবাহিনী এবং তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে লড়াই চলে। গত মাসের শেষ দিকে ফেডারেল বাহিনী তাইগ্রের রাজধানীর মেকেলের নিয়ন্ত্রণ নেয়। দীর্ঘ এই লড়াইয়ে কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এই সংঘাত কয়েক হাজার মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে এবং সুদানে হাজারো শরণার্থী পালিয়ে গেছেন। সেমাহাল মেলস এই সংঘর্ষ শুরুর আগে মেকেলে গিয়েছিলেন। তিনি তাঁর বাবাকে নিয়ে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করার পরিকল্পনা করেন। এরই অংশ হিসেবে গবেষণাকাজে সেখানে গিয়েছিলেন। মেলস জিনাউই টিপিএলএফের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন।
১৯৯১ সালে টিপিএলএফের নেতৃত্বে ইথিওপিয়া থেকে সামরিক সরকার উৎখাত করা হয়। ২০১৮ সালে আবি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগপর্যন্ত দেশটির রাজনীতিতে নিয়ন্ত্রণ ছিল এই গোষ্ঠীর।রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবি আহমেদ ক্ষমতায় আসার পর আফ্রিকার এই দেশে রাজনৈতিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন শুরু হয়। প্রতিবেশী ইরিত্রিয়ার সঙ্গে দুই দশক ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটে তাঁরই হাত ধরে। ফলে, ক্ষমতায় আসার মাত্র এক বছরের মাথায় নোবেল শান্তি পুরস্কার পান আবি।
প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় আবি আহমেদ প্রশংসিত হলেও নিজ দেশের উত্তেজনাপূর্ণ অঞ্চল তাইগ্রেতে শান্তি ফেরাতে তেমন পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ। উল্টো ব্যাপক রাজনৈতিক সংস্কারের নামে তাইগ্রের অধিবাসীদের কোণঠাসা করে ফেলেন বলে অভিযোগ ওঠে আবির বিরুদ্ধে।
এ ঘটনা ইথিওপিয়ার রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব বজায় রাখা তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট (টিপিএলএফ) পার্টির সঙ্গে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধ উসকে দেয়। শুরু হয় টিপিএলএফের বাহিনীর সঙ্গে ইথিওপিয়া কেন্দ্রীয় বাহিনীর রক্তক্ষয়ী সংঘাত।
সরকার টিপিএলএফকে সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনে অস্ত্র লুটের অভিযোগ এনেছে। তবে টিপিএলএফ তা অস্বীকার করেছে। গত ৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী আবি টিপিএলএফ মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন।