বর্ষায় জলাবদ্ধতা

শহরের বিভিন্ন এলাকার পানিনিষ্কাশনের নালাগুলো পরিষ্কার না থাকায় খালেও পানিপ্রবাহ ঠিক থাকছে না।বৃষ্টি হলেই রাজধানী ঢাকার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মিরপুর, পল্লবী, উত্তরা ও তুরাগের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়। অথচ ওই সব এলাকার বৃষ্টির পানি ধারণের জন্য নির্ধারিত যে জলাধার আছে, সেই গোড়ানচটবাড়ীতে তখনো থাকে পানির সংকট। জলাধারের সঙ্গে সংযুক্ত খালগুলো দখল ও সরু হয়ে গেছে। আবার খালগুলো রয়েছে ময়লা-আবর্জনায় ভরা। এ কারণে বৃষ্টির পানি ঠিকমতো জলাধারে প্রবেশ করতে পারছে না।

চলতি বর্ষা মৌসুমে গত পয়লা জুনে তিন ঘণ্টায় ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়, যা ছিল কয়েক বছরের মধ্যে বেশি বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। এর চার দিন পরে ৫ জুন সারা দিনে দুই দফায় আরও ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। তখনো গোড়ানচটবাড়ী জলাধারে ছিল পানির সংকট। ওই দুদিনের বৃষ্টিপাতে ঢাকা উত্তরের আওতাধীন অন্তত ১০৩টি এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়েছে। এর মধ্যে মিরপুর, পল্লবী, উত্তরা ও তুরাগের বিভিন্ন এলাকাও রয়েছে। কোনো কোনো এলাকার পানি সরতে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টাও লেগেছে।

তুরাগ নদ অংশে থাকা ২ নম্বর স্লুইসগেট গেট থেকে ১০ নম্বর সেক্টর–সংলগ্ন সেতু পর্যন্ত খিদির খালটি সরু হয়ে গেছে। খালটির ফুলবাড়িয়া অংশে সেতুর নিচে ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হওয়ায় মাত্র এক-তৃতীয়াংশ অংশে দিয়ে পানিপ্রবাহ হয়। টেকপাড়া নামে পরিচিত এলাকায় একটি বক্স কালভার্ট মাটি দিয়ে ভরাট হয়ে গেছে।

৬১৫ একর জায়গায় জলাধারটির অবস্থান। সেচকাজের জন্য জলাধারটিতে তিনটি পাম্প স্টেশন আছে। প্রতিটি স্টেশনে তিনটি করে মোট ৯টি শক্তিশালী সেচযন্ত্র আছে। একেকটি সেচযন্ত্র প্রতি সেকেন্ডে ৭ হাজার ৩৩৩ লিটার পানিনিষ্কাশনে সক্ষম। এই জলাধারে মিরপুরের বাউনিয়া, দ্বিগুণ ও রূপনগর খাল এবং উত্তরা ও তুরাগ এলাকার খিদির খাল দিয়ে পানি আসে।

বর্ষায় বৃষ্টি হলে ওই অংশে পানির প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। যে কারণে রূপনগর, ইস্টার্ন হাউজিং ও পল্লবীর বিভিন্ন এলাকার জলাবদ্ধতা হয়। বাউনিয়া খালও বিভিন্ন জায়গায় দখলের কারণে সরু হয়েছে।