পানিবন্দী মানুষ
সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি, কালীগঞ্জ ও দেবহাটা উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অস্বাভাবিক জোয়ারে বাঁধ ভেঙে গেছে। জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে সাত সহস্রাধিক চিংড়ি ঘেরের মাছ। এতে ঘেরমালিকেরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। ঘরে পর্যাপ্ত খাবার না থাকায় পানিবন্দী অনেক পরিবার অর্ধাহার–অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।
ঘরে পানি থাকায় ৩৫ হাজার পরিবার বাঁধ, উঁচু স্থান ও নৌকায় আশ্রয় নিয়েছে এবং এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের ২০–২৫ হাজার পরিবারের ঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। তাদের মধ্যে অনেকেই বাঁধ ও নৌকায় আশ্রয় নিয়েছে। আবার কিছু পরিবার ঘরের মালামাল নিয়ে অন্যত্র চলে গেছে।
শ্যামনগরের সাতটি ও আশাশুনির ছয়টি এলাকায় বাঁধ মেরামত করা যায়নি। ফলে এসব এলাকা দিয়ে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। ১৫-১৬টি গ্রামে জোয়ারের পানি ওঠানামা করছে।
আম্পানের পর অনেকে এখনো বাড়িতে ফিরতে পারেনি। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে নতুন করে এলাকা প্লাবিত হওয়ায় মানুষ চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। এ অবস্থায় অনেকে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। কেউ নৌকায়, আবার কেউ উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।ঘরে পানি ওঠায় আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের একটি পরিবার মালামাল নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে
সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি, কালীগঞ্জ ও দেবহাটা—চারটি উপজেলার ২৪টি ইউনিয়নের ৩৫ হাজার পরিবারের প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব ইউনিয়নে ৬০০ হাজার ৭৭ হেক্টর জমির চিংড়ি ঘের তলিয়ে প্রায় ৫৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২০ কিলোমিটার বাঁধের ২১টি স্থান ভেঙে ও ৩২টি স্থান দিয়ে উপচে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে।