রোজার গুনাগুন

রোজা দেহের কোষের চারপাশে হতে পারে এমন সাধারণ প্রদাহের পরিমাণ হ্রাস করে প্রতিরোধ ব্যবস্থায় উপকারী প্রভাব ফেলে। রোজা শরীরকে ‘শক্তি সংরক্ষণের মোডে’ রাখে বলেও মনে করা হয়। যখন উপবাসের সময় শেষ হয় তখন প্রতিরোধক কোষগুলো সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য দ্রুত কার্যকর হয়।রোজায় এক ধরনের শৃঙ্খলাবোধ কাজ করে। সময়মতো খাবার গ্রহণ, বিশ্রাম, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং ধূমপান ও মদ্যপান বর্জন; প্রভৃতি বিষয় প্রকারান্তরে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

এটি এমন একটি প্রাকৃতিক প্রতিকার যা শরীরকে খাবারের বিষ তথা টক্সিসিটি থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে কাজ করে।এ কারণে দেখা যায় অন্য ধর্মের লোকেরাও উপবাস পালন করে। এমনও প্রমাণ রয়েছে যে প্রাচীন মিসরীয়রাও দীর্ঘকাল ধরে তাদের অসুস্থতা কাটাতে উপবাস পালন করতো।

 

রোজার পরামর্শ

  • শক্তি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং দীর্ঘ সময় ক্ষুধাবোধ হয় না। লাল চাল, আলু, গমের রুটি, শস্য, শিম, ওট এবং মিষ্টি আলু খাবারের তালিকায় রাখুন।

 

  • একটি স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাবার বজায় রাখা দরকার। কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় যা হজমে দীর্ঘ সময় নেয় এবং এনার্জিতে রূপান্তরিত হয়।

 

  • তরমুজ, পেঁপে, বাঙ্গি, কমলা, ড্রাগন ফল এবং অন্যান্য মৌসুমি ফল খেতে ভুলবেন না। দিনে কমপক্ষে ২ লিটার পানি পান করুন।

 

  • যাদের ডায়াবেটিস নেই, তাদের চিনি গ্রহণের পরিমাণ যেন ৫০ গ্রামের বেশি না হয়। ৪ টেবিল চামচে সীমাবদ্ধ রাখতে পারলে ভালো। কারণ, চিনি আমাদের রোগ প্রতিরোধক কোষগুলোকে প্রভাবিত করতে পারে। এ ছাড়াও, উচ্চ ট্রান্সফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন এবং শর্করাযুক্ত খাবার বা পানীয় এড়িয়ে চলুন।

 

  • সবুজ শাকসবজি, ব্রকলি, গাজর এবং অন্যান্য ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবার খান। সঙ্গে প্রোটিন যেমন মাছ, ডিম, মুরগী, মাংস খাদ্য তালিকায় রাখুন।

 

  • দিনে কমপক্ষে চার ঘণ্টা বিশ্রাম নেওয়া উচিৎ। এ সময় ঘুমের সময়সূচি বদলে যায়। তাই পরিমাণমতো ঘুম হচ্ছে কিনা, সেই হিসাবও রাখা জরুরি।

 

  • ইফতারের অংশটি প্রতিদিনের খাবারের চাহিদার ১০-২৫ শতাংশ হওয়া উচিত। সূর্যাস্তের পর রাতের খাবারে হবে মোট চাহিদার ২৫-৩৫ শতাংশ। সেহেরিতে খেতে হবে ২০-২৫ শতাংশ।

 

  • রোজার সময়ও হালকা ব্যায়াম বা শারীরিক ক্রিয়াকলাপ চালিয়ে যেতে হবে।