করোনার টিকা প্রসঙ্গে ঢাকাকে আশ্বস্ত করলো দিল্লি

ব্রিটেনের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনা টিকা ‘কোভিশিল্ড’ নাম দিয়ে ভারতে উৎপাদন করছে সেরাম ইনস্টিটিউট। গতকাল সোমবার এটি অনুমোদনের কথা জানানো হয়, সঙ্গে রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞার খবরও সামনে আসে।

এতে টিকা পেতে সেরামের সঙ্গে চুক্তি থাকায় বাংলাদেশে উদ্বেগ তৈরি হয়। টিকার আমদানিকারক বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসসহ সরকার জানায়, চুক্তি অনুযায়ী টিকা যথাসময়ে পাওয়া যাবে।

এ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ায় আজ মঙ্গলবার সেরাম প্রধান পুনাওয়ালা বলেন, সব দেশেই টিকা রপ্তানির অনুমতি রয়েছে। এবং ভুল বোঝাবুঝি দূর করতে শিগগিরই একটি বিবৃতি দেয়া হবে।

এরপর আজ ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা আশ্বস্ত করে বলেন, প্রথমেই টিকা পাচ্ছে বাংলাদেশ, প্রাথমিকভাবে এতে কোনো সমস্যা নেই।

ঢাকায় দেশটির হাইকমিশনারের দায়িত্ব পালন করা এই কূটনীতিকের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে। এতে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে জি টু জি ভিত্তিতে এবং পরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ঢাকাকে টিকা দেবে নয়াদিল্লি।

এখনই বাণিজ্যিকভাবে টিকা সরবরাহ করা হবে না জানিয়ে শ্রিংলা বলেন, বৃহৎ পরিসরে টিকার উৎপাদন সম্ভব হলে বাণিজ্যিক চুক্তির আওতায় তা সরবরাহ করা হবে।

এর আগে গতকাল এএফপির এক প্রতিবেদন ঘিরে টিকার ওপর ভারতীয় নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ‘বিভ্রান্তি’ তৈরি হয়। পরে সেরাম জানায়, তাদের টিকা রপ্তানির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

তবে তারা এও জানায়, উৎপাদিত টিকা রপ্তানির অনুমতি পাওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। সেটা পেতে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।

এ বিষয়ে সেরামের জনসংযোগ কর্মকর্তা মায়াঙ্ক সেন বিবিসিকে জানান, টিকা রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা পুরোপুরি ঠিক নয়। কারণ তাদের টিকা রপ্তানির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

গত ৫ নভেম্বর সই হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, ৬ মাসে ৩ কোটি ডোজ টিকা বাংলাদেশকে দেবে সেরাম। প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসবে, যার প্রথম চালান ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় আসার কথা।

এ লক্ষ্যে গতকাল সোমবার এ টিকা আমদানি ও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। আজ মঙ্গলবার টিকা আমদানি করতে ৪ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।

করোনা প্রতিরোধ বিষয়ক প্রকল্পে স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কিনতে বরাদ্দ হয়েছে আরো ১ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা। ২০২০ সালের জুনে প্রথম অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পটির কাজ ২০২৩ সালের জুনে শেষ করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

প্রথমে প্রকল্প ব্যয় ১ হাজার ১২৭ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বেড়ে এখন ৬ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক ও এআইআইবির ৬ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা ঋণ এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বাকি ১৭২ কোটি টাকা দেয়া হবে।