অনির্বাচিত কেউ আসতে পারবে না বললেন প্রধানমন্ত্রী

বুধবার (২১ জুন) গণভবনে সম্প্রতি সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একবার যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিএনপি বাদ দিয়েছে, সেটাকে তারা আবার ফেরত চাচ্ছে। অথচ উচ্চ আদালতের রায় আছে, সেই মোতাবেক আমাদের সংবিধানও সংশোধন করা হয়েছে। একজন নির্বাচিত সরকারপ্রধান আরেকজন নির্বাচিত সরকারপ্রধান দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবেন। এর বাইরে অনির্বাচিত কেউ আসতে পারবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যেহেতু ওয়েস্টমিনস্টার টাইপের গণতন্ত্র তাই ইংল্যান্ডসহ ওইসব জায়গায় যেভাবে নির্বাচন হয় ঠিক সেভাবে আমাদের এখানে নির্বাচন হবে। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আমাদের বিরোধী দল থেকে নানান প্রস্তাব। তারা এখন আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়। এটা সম্পর্কে খালেদা জিয়ার উক্তি ছিল পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নেই। এ পদ্ধতিটা তারাই নষ্ট করেছে।

তিনি বলেন, একজন নির্বাচিত সরকারপ্রধানের জায়গায় আরেকজন নির্বাচিতকেই আসতে হবে। এটা সবাই জানে। জানার পরেও কেন সাংবিধানিক জটিলতার সৃষ্টি করা হচ্ছে? এর উদ্দেশ্যটা কি? এর মানে হচ্ছে, দেশের গণতান্ত্রিক ধারাটাকে নষ্ট করা। দেশ যে দীর্ঘদিন ধরে সুষ্ঠুভাবে চলছে তাকে নষ্ট করা।

তিনি আরও বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল কীভাবে? তখন তো তারা গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দিয়েই ক্ষমতায় এসেছিল। তাহলে এখন তারা দেশ বিক্রি করবে! নাকি সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়? আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। আমি এই দেশের কোনো সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চাই না। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিলে আমিও তখন ক্ষমতায় আসতে পারতাম। আর এখন যদি বলি সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বা আমাদের দেশ কারও কাছে লিজ দেব তাহলে আমার ক্ষমতায় থাকার কোনো অসুবিধা নাই। কিন্তু আমার দ্বারা সেটা হবে না।

এক প্রশ্নের উত্তরে সরকারপ্রধান বলেন, দেশের মানুষ কি গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা চান, অর্থনৈতিক উন্নতি চান, মানুষের কল্যাণ হোক সেটা চান? নাকি ২০০৭ সালের মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকার, আবার সেই জরুরি অবস্থা, আবার সেই ধরপাকড় সেগুলো চায়। এটা দেশের মানুষকে বিবেচনা করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, সাড়ে ১৪ বছর আমরা অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ খুন, অপপ্রচার মোকাবিলা করেই দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। সেটাই মানুষ চাইবে? নাকি আবার সেই সন্ত্রাস যুগে প্রবেশ করবে, ভোট চুরি, ভোট ডাকাতির যুগে প্রবেশ করবে। সেটা জনগণের ওপর ছেড়ে দিচ্ছি।

উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন চার দিনের সফরে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৪ ও ১৫ জুন অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড অফ ওয়ার্ক সামিট: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’-এ যোগদান শেষে ১৭ জুন দেশে ফেরেন তিনি। এর আগে গত ২৩-২৫ মে কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় কাতার ইকোনমিক ফোরামে যোগ দেন সরকারপ্রধান।