ভাত চুরির অপরাধে নির্যাতন
ভাত চুরির চেষ্টা করায় এক যুবককে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ বগুড়ার সদর উপজেলার নিশিন্দারা ইউনিয়নে উঠেছে।
নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তি হলেন, বারপুর মধ্যপাড়ার শফিকুর রহমানের ছেলে সাব্বির।
বুধবার (২৪ মে) নিশিন্দারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সোমবার (২২ মে) রাতে ওই ইউনিয়নের বারপুর লালিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ইতোমধ্যে এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া তিন মিনিটের ভিডিওতে দেখা যায়, লাঠি ও কাঠের বাটাম দিয়ে কয়েকজন লোক তাকে নির্যাতন করছে। প্রথমে তাকে টেনেহিঁচড়ে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর লাঠি ও কাঠের বাটাম দিয়ে মারধর করা হয়। নির্যাতনের সময় তাকে দড়ি দিয়ে পিঠমোড়া করে বাঁধা হয়। একই সঙ্গে দুই পা বেঁধে রাখা হয়।
স্থানীয়রা জানান, সাব্বির বারপুর লালীপাড়া এলাকার একটি বাড়ির দোতলার রান্নাঘরের জানালা দিয়ে ভাত চুরির চেষ্টা করছিল। এ সময় বাড়ির লোকজন দেখতে পেয়ে চিৎকার করলে, সে পালানোর চেষ্টা করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে ধাওয়া করে আটক করে। এ সময় তার হাত-পা বেঁধে মারধর করার পর ছেড়ে দেয়। সে মাদকাসক্ত বলেও দাবি তাদের।
সাব্বিরের নানি মরিয়ম বেগম জানান, ছোটবেলা থেকেই সাব্বির আমার কাছে রয়েছে। তার বাবা-মা ভিন্ন এলাকায় থাকে। সোমবার কোনো রান্না না হওয়ায় সে ক্ষুধার জ্বালায় হয়তো ভাত চুরির চেষ্টা করে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) স্নিগ্ধ আখতার জানান, ফেসবুকে সাব্বিরকে নির্যাতনের ভিডিওটি দেখে মর্মাহত হয়েছি। এমনভাবে কেউ নির্যাতন করতে পারে না। নির্যাতনকারীদের চিহ্নিত করতে সংশ্লিষ্ট ফাঁড়িকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।
নিশিন্দারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জানান, বারপুর লালিপাড়ায় সাব্বিরকে চোর সন্দেহে নির্যাতন করা হয়েছে। সাব্বির মাঝে মধ্যে কাঠমিস্ত্রির কাজ করে। কিন্তু অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তাকে তেমন কেউ কাজে নেয় না। এভাবে তাকে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি।