মাথা ঘোরা জন্য ঘরোয়া সমাধান
মাথা ঘোরা হল মাথা হালকা হওয়া, মহাশূন্যে দিশেহারা হওয়া বা অস্থিরতার অনুভূতি থাকা। মাথা ঘোরা এমন একটি সমস্যা যা প্রত্যেক ব্যক্তি অবশ্যই তাদের জীবনের কোনো না কোনো সময়ে অনুভব করেছে। এই অবস্থায়, ভারসাম্য হারিয়ে মাথা ঘুরতে শুরু করে, ফলে পড়ে যায় স্বাভাবিক। মাথা ঘোরার সমস্যা অনেক কারণেই হতে পারে। রক্তের চাপ কমে যাওয়া, হার্টের কার্যক্রমে সমস্যা, রক্তস্বল্পতা, হাইপোগ্লাইসেমিয়া, হিটস্ট্রোক, দৃষ্টিশক্তির সমস্যা, মাইগ্রেন, উদ্বেগজনিত সমস্যা, মাথায় আঘাত ইত্যাদি কারণে মাথা ঘুরতে পারে। মাথা ঘোরা কোনো রোগ নয়, বরং খারাপ স্বাস্থ্যের লক্ষণ।
মাথা ঘোরার সমস্যা কমাতে ঘরোয়া উপায়
১. পানি পান করুন
পানিস্বল্পতার কারণে অনেক সময় মাথা ঘোরার সমস্যা হয়। এমন হলে পানি পান করুন। প্রতিদিন অন্তত ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করুন। পাশাপাশি আপনি সামান্য মধু দিয়ে ভেষজ চা পান করতে পারেন। এ ছাড়া খেতে পারেন ফলের জুস।
২. কিছু খান
রক্তে সুগারের মাত্রা কমে গেলে, বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে মাথা ঘোরার সমস্যা হতে পারে। তাই এমন হলে স্বাস্থ্যকর কোনো স্ন্যাকস খান। এতে সমস্যা কমতে সাহায্য হবে। এ ক্ষেত্রে উচ্চ পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট রয়েছে এমন খাবার খেতে পারেন। যেমন : চকলেট, কলা খেতে পারেন। পাশাপাশি খেতে পারেন একমুঠো বাদাম । যেমন : কাঠবাদাম, ওয়ালনাট ইত্যাদি।
৩. আদা
আদা বমি ও বমিভাব কমাতে উপকারী। এটি মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে, দ্রুত মাথা ঘোরার সমস্যা কমায়। তাই মাথা ঘোরার সমস্যা হলে এক টুকরো আদা চিবিয়ে খান। পাশাপাশি খেতে পারেন আদা চা।
৪. স্বাস্থ্যকর খাবার খান
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া স্নায়ু পদ্ধতিকে ভালো রাখে। এতে রক্তস্বল্পতা, রক্তচাপ কমে যাওয়া ইত্যাদি প্রতিরোধ হয়। এ ক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় আয়রন, ভিটামিন এ, ফলিস এসিড ও আঁশযুক্ত খাবার রাখুন।
৫. লেবু খান
মাথা ঘোরা হলে মানুষ প্রায়ই লেবুর রস খান। লবণ দিয়ে লেবু চাটলেও মাথা ঘোরা কমাতে সাহায্য করে। লেবু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ।
৬. আমলা ব্যবহার করুন
আমলাকে মাথা ঘোরা দূর করার জন্য একটি চমৎকার ঘরোয়া প্রতিকার বলা হয়। প্রাচীনকাল থেকে এটি চিকিত্সা প্রক্রিয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আমলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং মাথা ঘোরা রোধ করে। আমলা ব্যবহার করতে, বীজগুলি সরিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন, ধনে গুঁড়ো যোগ করুন এবং সারারাত রেখে দিন। সকালে এই মিশ্রণটি ছেঁকে পান করলে ভার্টিগোর সমস্যা কমে যায়। মাথা ঘোরা উপশম না হওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়াটি কয়েক দিন পুনরাবৃত্তি করুন।
৭. মধু ব্যবহার করুন
মধুতে প্রাকৃতিকভাবে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা রোগের ঝুঁকি কমায় এবং মাথা ঘোরার সমস্যাও দূর করে। মধু শক্তি বৃদ্ধি করে এবং মাথা ঘোরা প্রতিরোধ করে। মধু ব্যবহার করার দুটি উপায় আছে। হয় আপনি আপেল সিডার ভিনেগারের সাথে মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন, অথবা আপনি লেবুর রস এবং এক চা চামচ মধু গরম পানিতে মিশিয়ে পান করতে পারেন। এই প্রক্রিয়াটি আপনাকে মাথা ঘোরা থেকে মুক্তি দেবে।
৮. ঘুমান
অনেক সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলেও মাথা ঘোরার সমস্যা হয়। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিন। প্রতিদিন অন্তত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমান।