ঘরে বসেই মেদ কমানোর সহজ ও কার্যকরী উপায়
পেটে মেদ বা চর্বি হলে জীবন যেমন কষ্টকর হয়ে পড়ে, তেমনি নষ্ট হয় সৌন্দর্য। এমন অনেক মানুষ আছেন যারা খুব বেশি মোটা নন তবে পেটে বা দেহের কিছু কিছু স্থানে মেদ জমায় খুবই অস্বস্তিতে আছেন। কিন্তু একটু সচেতন হলেই অতিরিক্ত মেদ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
মেদ থেকে মুক্তি পেতে এমন খাবার খান যা সলিউবল ফাইবারে সমৃদ্ধ। সলিউবল ফাইবার পেটে অনেকক্ষণ স্থায়ী হয়। ফলে ঘন ঘন ক্ষুধা পায় না, দীর্ঘক্ষণ পেট ভরে থাকার অনুভূতি হয়। শাক-সবজি জাতীয় খাবারে ফাইবার বেশি পরিমাণে থাকে। তাই মেদ কমাতে বেশি করে ফল ও সবজি খান, এতে ফাইবারের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণও পাওয়া যাবে।
সবরকম মিষ্টি এবং কোমল পানীয় গ্রহন থেকে বিরত থাকুন। বোতলজাত সফট ড্রিঙ্কস তো বটেই, বাসায় তৈরি শরবত, স্কোয়াশ ইত্যাদি থেকেও যতটা সম্ভব দূরে থাকার চেষ্টা করুন। চলবে না কোন মিষ্টি, ফলের রস এবং এনার্জি ড্রিঙ্ক। চিনি হচ্ছে অর্ধেক গ্লুকোজ, অর্ধেক ফ্রুকটোজ এবং আমাদের লিভার তা সংশ্লেষণ করতে পারে না। আপনি যত বেশি চিনি খাবেন, তত বেশি ফ্রুকটোজ জমা হবে লিভারে এবং একটা সময়ের পর লিভার তা ফ্যাটে পরিণত করবে৷
সমীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে অতিরিক্ত চিনি খেলে লিভার আর পেটে ফ্যাট জমতে বাধ্য। তখন শরীরে ইনসুলিনের প্রতি রেজিস্ট্যান্ট তৈরি হবে। তবে ফ্রুকটোজ শুনেই আবার ফল খাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আছে এমনটা ভাবার কারণ নেই। গোটা ফল চিবিয়ে চিবিয়ে খাওয়ার অনেক উপকারী দিক আছে, এর ফলে ফ্রুকটোজের অপকারী দিকগুলি নাকচ হয়ে যায়৷ মনে রাখতে হবে, প্যাকেটজাত যেকোন খাদ্যে, এমনকি ‘হেলথ ফুড’ তকমা লাগা খাদ্যও চিনি লুকিয়ে থাকে!
দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় প্রোটিনের মাত্রা বাড়ান। যাঁরা নিজেদের ওজন কমাতে চাচ্ছেন, তারা পুষ্টিবিদদের সাথে পরামর্শ করে আমিষসমৃদ্ধ কোনও ডায়েট ট্রাই করে দেখতে পারেন। বাড়তি আমিষ ঠেকিয়ে রাখবে আপনার খিদের বোধ, বাড়াবে মেটাবলিজমের হার। বাদাম, দুধ ও দুধজাত খাবার, মাছ, কুসুমসহ ডিম, মাংস, ডাল ইত্যাদি প্রোটিনের উৎকৃষ্ট উৎস। তবে এগুলি প্রতিদিনের ডায়েটে রাখার পরে যদি মনে হয় যে শরীরে যথাযথ প্রোটিন সংশ্লেষণ হচ্ছে না, তাহলে প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করার কথা ভেবে দেখতে পারেন।
খাদ্য তালিকায় কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমান। কার্বোহাইড্রেট একেবারে বাদ দেয়া খুব বড় ভুল। তবে আমাদের দৈনিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট, বিশেষ করে ময়দার মতো রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট আর ভাজাভুজি খাওয়ার যে অভ্যেস গড়ে উঠেছে সেটা অবশ্যই বদলানো দরকার।
এই সব বিধিনিষেধ মানার পাশাপাশি শারীরিক পরিশ্রম না করলে কিন্তু প্রত্যাশিত ফল পাওয়ার আশা নেই। এক্ষেত্রে ব্যায়াম বলতে কিন্তু আমরা কেবল পেটের ব্যায়ামের কথা বলা হচ্ছে না৷ যে কোনও এক্সারসাইজ পুরো শরীরের ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি সাঁতার, হাঁটা, দৌড়নোর মধ্যে থেকে যেকোন একটা বেছে নিতে পারেন। হাই বা লো ইন্টেনসিটি ইন্টারভ্যাল ট্রেনিংও ট্রাই করে দেখতে পারেন।