রংপুরে পোশাকশ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ।

ঢাকায় যাওয়ার জন্য রংপুরে শত শত মানুষ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। তারা বিভিন্ন পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। লকডাউন এর মধ্যে চাকরির কারণে তাঁদের ঢাকায় যেতে হবে।

ঢাকা যা্ওয়ার জন্য  তাঁরা রংপুর শহরের মডার্ন মোড় এলাকায় সমবেত হয়েছেন। রাস্তায় দেখতে পাওয়া পণ্যবাহী ও খালি ট্রাকে চড়ে তাঁরা  রওনা দেন, তবে পুলিশ তাঁদের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শত শত মানুষ জড়ো হয়ে কোনো না কোনো যানবাহনে চড়ছেন। এর মধ্যে কিছু ট্রাক রয়েছে। রয়েছে থ্রি–হুইলার, ভটভটি, পিকআপ ভ্যান।  বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ বাড়তে থাকে।

ঘটনা স্থলে পুলিশ এসে এসব যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। ঢাকা যাওয়ার জন্য পরে উপায় না পেয়ে  বের হওয়া শত শত নারী–পুরুষ ওই এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেছেন।

রংপুরের বুড়িরহাট এলাকা থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য এখানে এসেছেন সুমী বেগম (৩০)।সুমী বেগম ঢাকার একেএস গ্রুপ পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। চাকরির কারণে তাঁকে ঢাকা যেতেই হবে। প্রতিদিনই ঢাকা যাওয়ার জন্য চেষ্টা করেছেন।

কিন্তু পরিবহণের নানা সমস্যার কারণে যেতে পারেননি। তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দলের অনেকে ঢাকা গেছেন। তাহলে আমরা কেন যেতে পারব না? আজকে ভোর থেকে মহাসড়কে দাঁড়িয়ে আছি। যানবাহন যেটা পেয়েছি সেটাতেই চড়েছি।’

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার শারমিন আক্তার (৩২)। তিনি সাভারের এবিএস পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকার যাবার না পারলে খুব অসুবিধা হবে। যেমন করি হউক যাওয়া লাগবে। চাকরি চলি যাওয়ার ভয় আছে। তখন কী করি খামো?’

রংপুর শহরের সর্দারপাড়া এলাকার ইয়াছিন আলী (৩৫)। তিনি ঢাকার একেএস গ্রুপের পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। তিনি বলেন, ‘মালিকপক্ষ ঢাকায় যেতে বলেছে বলেই ছুটে যাচ্ছি। রাস্তাত তো অনেক গাড়ি চলে। কষ্ট করে হলেও মাননুষজন যাচ্ছেন। তাই দুই সন্তান ও স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে কষ্ট হলেও যাওয়ার চেষ্টা করছি।’

ঘটনা স্থলে দেখা যায়, শত শত মানুষ গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন। প্রচণ্ড রোদের কারণে কেউ গাছের নিচে, কেউ দোকানের শেডে বসে আছেন। তাঁদের অধিকাংশই পোশাকশ্রমিক। ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় চাকরি করেন।

সকাল থেকে ইতিমধ্যে কিছু মানুষ চলেও গেছেন। বেলা ১১টার পর মানুষ যখন বাড়তে থাকে, তখন পুলিশ যান চলাচলে বাধা দেয়। এমন অবস্থায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা।

তাঁদের একটাই দাবি, চাকরির কারণে তাঁদের ঢাকায় যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রশিদ বলেন, কঠোর বিধনিষেধের কারণে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বাধা দেওয়া হয়েছে। তাই কিছু করার নেই।