বাংলাদেশের ইতিহাসে রেমিটেন্সে রেকর্ড

অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এ অঙ্ক আগের বছরের চেয়ে ৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার বা ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ২ লাখ ১০ হাজার ১১৫ কোটি টাকা, যা নতুন অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের এক-তৃতীয়াংশের ।বেশিবাংলাদেশের ইতিহাসে এক বছর বা অর্থবছরে এত বেশি রেমিট্যান্স কখনই আসেনি।মহামারিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তার কারণে প্রবাসীরা জমানো টাকা দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় সোমবার যে তথ্য জানিয়েছে তাতে দেখা যায়, গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসীরা ২৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। শুধু গত জুন মাসেই তারা পাঠিয়েছেন ১৯৪ কোটি ৮ লাখ ডলার। অর্থবছরের প্রতি মাসেই আগের বছরের একই মাসের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। বছরের ১২ মাসের মধ্যে ৭ মাসেই ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।মহামারির এই বছরে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বছরের প্রথম মাস গত বছরের জুলাইয়ে,যা এক মাসের হিসাবে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে মে মাসে, ২১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার।

২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ হাজার ৮২০ কোটি ৫০ লাখ (১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে, যা ছিল এক অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স। মহামারির কারণে রেমিট্যান্স কমার আশঙ্কা করা হলেও বাস্তবে তা ঘটেনি। গত বছরের মার্চে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটা পড়ে। ওই মাসে ১০৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। এরপর আর রেমিট্যান্স কমেনি; প্রতি মাসেই বেড়ে চলেছে। রেকর্ডের পর রেকর্ড হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে; কল্পনারও বাইরে। সবাইকে অবাক করে দিয়ে আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনেরা এই কঠিন সময়ে বেশি বেশি অর্থ দেশে পাঠিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন। আমি আবারও এই ভাই-বোনদের কৃতজ্ঞতা জানাই।

রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে ২ শতাংশ প্রণোদনা অবদান রেখেছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী কামাল বলেন, ১২ বছর আগে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ৭ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। আমাদের সরকারের সময়ে তা ধারাবাহিকভাবে বাড়তে বাড়তে এখন ২৫ বিলিয়ন ডলার ছুঁই ছুঁই করছে। এই অর্জন নিঃসন্দেহে আর একটি অনন্য ঐতিহাসিক রেকর্ড।