আর্জেন্টিনার সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী
আর্জেন্টিনার দেশটির বৃহত্তম শহর ও রাজধানী বুয়েনোস আইরেস, সেখানে মুসলিমরা দেশটির বৃহত্তম সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। দেশটিতে চার থেকে পাঁচ লাখ মুসলিম বসবাস করেন। অবশ্য পিউ রিসার্চ সেন্টারের জরিপ মতে ২০১০ সালে দেশটিতে ১০ লাখের মতো মুসলিম বাস করে।
পঞ্চদশ শতাব্দীতে স্পেন থেকে মুর ও মরিস্কো মুসলিমরা স্পেনের নাবিকদের সঙ্গে আর্জেন্টিনায় এসেছিল। তাদের অধিকাংশই আর্জেন্টিনায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছিল। এদের অনেকে নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেতে বাধ্যতামূলক খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করে। উনিশ শতাব্দীতে আর্জেন্টিনায় আরব বংশোদ্ভূত অভিবাসীদের আগমন ঘটে। এদের অধিকাংশই ছিল সিরীয় ও লেবানিজ বংশোদ্ভূত। এদের অধিকাংশ খ্রিষ্টান ও ইহুদি ধর্মাবলম্বী হলেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলিম ছিল। বর্তমানে আর্জেন্টিনায় আরব বংশোদ্ভূত প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ বাস করে।
দেশটির অধিকাংশ মুসলিম রাজধানী বুয়েনোসে বাস করেন। ১৯৮৩ সালে ইরান সরকারের সহায়তায় শিয়াদের আত তাওহিদ মসজিদ স্থাপিত হয়। ১৯৮৫ সালে সুন্নি মুসলিমদের প্রথম মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার স্থাপিত হয়। ইসলামী শিক্ষার প্রসার, আলোচনা সভার আয়োজন, ইসলামী শরিয়াহ সম্মত বিবাহের ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সামাজিক কার্যাবলি সেন্টারের তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন করা হয়। আর্জেন্টিনার স্থানীয় মুসলিমরা নানা রকম নিপীড়ন ও অন্যায়-অবিচার মধ্যে দিনকাল পার করলেও তাদের মধ্যে আরব্য ও স্পেনিশ সংস্কৃতি বজায় ছিল। মুসলিম শিশুদের মধ্যে ইসলামী শিক্ষা প্রসারে আরব আর্জেন্টিনিয়ান ইসলামিক এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠিত হয়।
ইসলামিক অর্গানাইজেশন অব লেটিন আমেরিকা (আইওএলএ)-এর মহাসচিব ড. মুহাম্মদ ইউসুফ হাজের জানান, আর্জেন্টিনায় মুসলিম অভিবাসীদের অভূতপূর্ব সাফল্যের কারণে দেশটির ক্যাথলিক ও ইহুদি জনগোষ্ঠীর আধিপত্য হ্রাস পাচ্ছে। ফলে দেশটির বিভিন্ন জনগোষ্ঠী মুসলিমদের সঙ্গে আলোচনা বসতে বাধ্য হচ্ছে।