বারডেম মানেই ডায়াবেটিস চিকিৎসার কারখানা

ডায়াবেটিস রোগীদের বিশেষায়িত চিকিৎসার আস্থার প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে বারডেম। প্রতিদিন গড়ে ৫৩ জন নতুন ডায়াবেটিস রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিবন্ধন করছেন। বছরে নিবন্ধন করা রোগী বাড়ছে প্রায় তিন শতাংশ হারে।

প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ ইব্রাহিমের উদ্যোগে ১৯৫৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ডায়াবেটিক সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন সমিতির নাম ছিল ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন ফর পাকিস্তান। দূরদৃষ্টিসম্পন্ন অধ্যাপক ইব্রাহিম এমন একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন, যেখানে দরিদ্র ডায়াবেটিস রোগীরা বিনা মূল্যে সেবা পাবেন। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় নিজের বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষকে সমিতির ব্যবহারের জন্য প্রস্তাব করেন। ওই বাড়িতেই ডায়াবেটিস সেবার জন্য বহির্বিভাগ চালু করেন। সেখানেই প্রথম শুরু হয় বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা।

পরীক্ষায় নতুন রোগীর ডায়াবেটিস শনাক্ত হওয়ার পর তাঁকে প্রথমেই নিবন্ধন করা হয়। নিবন্ধনের সময় রোগীর স্বাস্থ্যসম্পর্কিত ইতিহাস নেওয়া হয়। এরপর প্রত্যেক রোগীকে একটি করে গাইড বই দেওয়া হয়। বইয়ে স্বাস্থ্যসম্পর্কিত তথ্য ছাড়াও পরীক্ষা-নিরীক্ষার তথ্য লেখা হয়। পরবর্তী কোন তারিখে হাসপাতালে আসতে হবে, তারও উল্লেখ থাকে।

নিবন্ধিত ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৫২৬ জনের মধ্যে প্রায় ১ লাখ রোগী বিনা মূল্যে সেবা পান। তা ছাড়া রোগীর আর্থিক অবস্থাভেদে ইনসুলিন, ওষুধ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রে ২৫ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় দেওয়া হয়।সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিবছর ডায়াবেটিক সমিতিকে কিছু অর্থ দেয়। সেই অর্থের একটি অংশ পায় বারডেম হাসপাতাল। কেবিন থেকে এবং অন্য শয্যা থেকে (দরিদ্রদের জন্য রাখা শয্যা ছাড়া) আয় করে বারডেম কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, “বারডেম হাসপাতালের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই যে এখানে দরিদ্র ও ধনী একই মানের সেবা পান। যে সেবা ধনী বা দরিদ্রকে সমানভাবে দেওয়া সম্ভব হবে না, সেই সেবা বারডেম হাসপাতালে চালু করা হয় না। সম্ভবত এ রকম হাসপাতাল দেশে আর নেই।“