একমাসে তার ১৫ লাখ টাকা আয়
বরগুনা সাগরতীরের পাথরঘাটা কড়ইতলা গ্রামে প্রবেশ করলে চোখ আটকাবে গাছে থোকায় থোকায় ঝুলতে থাকা ফলের দিকে। ফলটি ছোট আকারের লম্বাটে, ডিম্বাকার বেগুনি কিংবা কালো রঙের। এটি জাম, মৌসুমি ফল। দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও তেমন রসালো ও সুস্বাদু। নুনের গ্রামের এই জাম খেতে হালকা টক আর মিষ্টি স্বাদের। এই জাম ফলিয়েছেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত কড়ইতলার কৃষক আহসান হাবিব। একটি দুটি নয়, তার ৪৩টি গাছে ধরেছে থোকায় থোকায় জাম। জাম বিক্রি করেই তার প্রতিদিন আয় ৫০ হাজার টাকা। একমাসে জাম বিক্রি করে আয় হবে তার ১৫ লাখ টাকা।
বরগুনা সদর উপজেলার কড়ইতলা গ্রাম। মোঠে পথ ধরে কিছু দূর গেলেই আহসান হাবিবের খামার বাড়ি। কৃষিতে ভরা খামারটি দেখে রীতিমতো চমকে গিয়েছিলেন কৃষিমন্ত্রী। পরবর্তিতে তরমুজ আর সবজি ফলিয়ে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার লুফে নিয়েছিলেন আহসান হাবিব। পুরস্কারের আগেই তিনি পাড়ি জমান বিদেশে। সেখানে গিয়েও কৃষি পেশা হিসেবে বেছে নেন। সিডরের পর দেশে ফিরেন। তখন কৃষিতে দুর্দিন চলছিল। কিন্তু কৃষির নেশা থেকে হাবিকে আলাদা করা যায়নি। তিনি এসেই নেমে পড়েন কৃষিতে।
মে মাসের শুরুতে গাছ কানায় কানায় জামে পরিপূর্ন হয়ে যায়। বলতে গেলে জামে পুরো গাছ ঢেকে যায়। মে মাসে প্রতিদিন গড়ে ৮ মন করে বাগান থেকে জাম সংগ্রহ করতেন। শুরুর দিকে প্রতিমন জাম আট হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আস্তে আস্তে জামের উৎপাদন বাড়তে থাকে। একই সঙ্গে জামের দর মন প্রতি চার হাজার টাকায় নেমে আসে। বৃষ্টি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদন কমে আসতে শুরু করে। পাশাপাশি জামের দর এখন দুই হাজার টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। সব মিলিয়ে এই মৌসুমে তিনি প্রায় ১৫ লাখ টাকার জাম বিক্রির শেষ পর্যায়ে পৌছেছেন।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক আকম মোস্তফা জামান বলেন, “জ্যৈষ্ঠের শেষ থেকে আষাঢ়ের প্রথম সপ্তাহ মিলে প্রায় ২০ দিন খাওয়ার উপযুক্ত জাম পাওয়া যায়। ব্যবসায়িক উদ্যোগে উন্নত জাতের জাম বা হাইব্রিড জামের চাষ এই অঞ্চলে হয় না। তাই বাজারে পাওয়া জামের সবটাই দেশি জাতের।“