অনলাইনে আমের বাজার রমরমা

রাজশাহীর ঘরে ঘরে এখন অনলাইন ব্যবসায়ী। করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা অনলাইন ব্যবসার প্রতি ঝুকে গেছে। অনলাইন ব্যবসায় মন্দার কোনো প্রভাব নেই। খরচসহ আগাম টাকাও পাচ্ছেন। আম পাঠাচ্ছেন পরে। ব্যবসায়ীদের হিসাবমতে, রাজশাহীর আমের প্রায় ৩০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছেন এই অনলাইন ব্যবসায়ীরা।

রাজশাহীতে সবচেয়ে বড় আমের বাজার বসে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে। এবার বানেশ্বর কলেজ মাঠে আমের বাজার বসেছে। প্রতিদিন সেখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আম বেচাকেনা চলে। এই বাজারের ইজারাদার ওসমান আলীর হিসাবমতে, ভরা মৌসুমে প্রতিদিন বানেশ্বর থেকে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার মেট্রিক টন আম বেচাকেনা হয়। তাঁর মতে, রাজশাহীর ৩০ শতাংশ বাজার এখন নিয়ন্ত্রণ করছেন অনলাইন ব্যবসায়ীরা।

গত বছর এ সময় ল্যাংড়া আম দেড় থেকে ২ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। আর সবচেয়ে মন্দা বাজার লকনা আমের। এই আম এবার ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছর এ সময়ে হিমসাগর আম বানেশ্বর বাজারে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। এবার এই আম ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ল্যাংড়া আম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।

করোনার কারণে মানুষের হাতে টাকা নেই। মানুষ আম কিনছে কম। তাঁদের ব্যবসা পড়েছে ঝুঁকির মুখে। চাষিরাও সেই ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। তিনি বলেন, সেই দিক থেকে যাঁরা অনলাইনে ব্যবসা করছেন, তাঁরা খুব সুবিধায় আছেন। তাঁরা ক্রেতার কাছ থেকে আগেই অর্ডার নিচ্ছেন, টাকা নিচ্ছেন। তারপর আম পাঠাচ্ছেন। পাঠানোর খরচও ক্রেতারাই দিচ্ছেন। বাজার যা-ই হোক, অনলাইন ব্যবসায়ীদের লোকসানের কোনো ভয় নেই। আর যাঁরা বাগান চুক্তিতে আম কেনেন, তাঁদের টাকা আড়তে পড়ে থাকছে।

করোনাকালে চাকরি হারিয়ে বাসায় বসে ছিলেন পুঠিয়া উপজেলার নন্দনপুর গ্রামের এক নারী। তিনি এবার বাগান থেকে আম পেড়ে বিক্রির জন্য তাঁর ফেসবুক পেজে একটি ঘোষণা দিয়েছিলেন। বেশ সাড়া পেয়েছেন। তিনি বলেন, তাঁর ফেসবুকের অনুসারীরা প্রতিদিন আমের ফরমাশ পাঠাচ্ছেন। সারা দিন এ নিয়েই ব্যস্ত আছেন। পুঠিয়া থেকে পাঠানোর খরচসহ হিমসাগর আম ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজিতে সরবরাহ করছেন।