সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছে তরুণীরা
নারীরা সামাজিক যোগাযোগের সাইট ও ব্যক্তিগত যোগাযোগ চালাতে মোবাইল ফোনই বেশি ব্যবহার করে। তাই এখন সাইবার অপরাধের নতুন হাতিয়ার হয়ে উঠেছে ‘মোবাইল ফোনের নিয়ন্ত্রণ’। ফোন থেকে তথ্য মুছে ফেললেও অনেক সময় ‘রিস্টোর’ করে তা ফিরিয়ে আনা যায়। ইমোসহ কিছু অ্যাপের আইডির নিয়ন্ত্রণও নেওয়া যায় সহজে। এসব সুযোগ কাজে লাগিয়ে নতুন ধরনের প্রতারণা চলছে।
সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারে এখন প্রতিদিন মোবাইল ফোনে, ফেসবুক পেজে বা সরাসরি শতাধিক অভিযোগ জমা পড়ছে; যার বেশির ভাগ অভিযোগই হয়রানির শিকার নারীদের। পুরুষরাও এ ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছে, তবে তুলনামূলক কম। পুলিশ সদর দপ্তরের পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন নামের ফেসবুক পেজেও প্রতিদিন অর্ধশত অভিযোগ করছে নারীরা।
সিআইডির সাইবার ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান বলেন, “এখন ফোনে, পেজে বা সরাসরি মাসে সাড়ে তিন হাজার অভিযোগ পাচ্ছি আমরা। নতুন ধরনের জালিয়াতি ও অর্থপাচারের মতো অপরাধ চলে এসেছে সাইবার জগতে। তবে এর মধ্যে নারীদের হয়রানি, আইডি হ্যাক, প্রতারণার বিভিন্ন অভিযোগ পাচ্ছি।“
নারীদের কাছে পাওয়া অভিযোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ব্ল্যাকমেইলিং, পর্নোগ্রাফি, ফেসবুক আইডি অন্যে ব্যবহার, ফেসবুক আইডি হ্যাক করা ও হুমকি দেওয়া ইত্যাদি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভিযোগ নিয়ে কাজ শুরু হয়। ফোনে পরামর্শ সহায়তা দেওয়া হয়। মামলা বা জিডি করাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। দ্রুত সুরক্ষার প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট শাখার মাধ্যমে তা করা হয়।
বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির সহকারী অধ্যাপক ও তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা বলেন, “মোবাইল ফোন থেকে তথ্য চুরির ঘটনা পুরনো। এর মাধ্যমে যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হয়রানি ও প্রতারণার নতুন ধরন ঘটে চলেছে। ফোন হারালে বা অন্যের হাতে চলে গেলে এসব ঘটনা ঘটে। অসতর্কতার কারণে ডিভাইস থেকে এমন সাইবার ক্রাইমের বেশির ভাগই শিকার নারীরা।
তিনি বলেন,নিরাপত্তার সবচেয়ে বড় সমাধান হচ্ছে এন্টি ভাইরাস ব্যবহার।কম্পিউটারের মতোই চার-পাঁচ শ টাকায় অ্যানড্রয়েড ফোনের এন্টি ভাইরাস পাওয়া যায়। এটি দিয়ে ফোন হাতছাড়া হলে ট্রাকিং করা যায় এবং ডাটা মুছে ফেলা যায়। ফোনে পেটার্ন লক ব্যবহার করতে হবে। ফোন চুরি হলে পেটার্ন লক থাকলে তা ফরমেট দিয়ে চালু করতে হয়। এরপর সিম দিয়ে যোগাযোগের অ্যাপ খুলতে হয়। তাই আসল মালিককে দ্রুত আবার ফোনের সিম তুলে নিতে হবে। এর মাধ্যমে ইমো, হোয়াটসঅ্যাপের মতো অ্যাপ চালু করতে পারবে না অন্য কেউ। আর ফেসবুক সব সময়ই লকআউট করে রাখা প্রয়োজন। যদি লগইন থাকে তবে অন্য ডিভাইস দিয়ে চালু করে অল ডিভাইস অপশনে লগআউট করতে হবে।“