ফেরি-ঘাটে মানুষের ঢল
সামনে ঈদ ঘিরে শুক্রবার সকাল থেকে বেলা বারার সাথে সাথে ঢাকা থেকে থাকে দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ ভির জমায় ফেরি ঘাটে। পরিবার–পরিজনদের সঙ্গে ঈদ করতেই তাঁরা আগেভাগেই রাজধানী ঢাকা ছেড়েছেন। তবে ঢাকা থেকে আসা বেশির ভাগ যাত্রীদের মুখে মাস্কের ব্যবহার থাকলেও ছিল না সামাজিক দূরত্ব। ফেরিতে প্রচণ্ড ভিড় থাকায় যাত্রীরা একে অপরের গা ঘেঁষে দাঁড়াতে হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে সাধারণত ১৬টি ফেরি যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে পারাপার হয়। চলমান লকডাউনে ১৪ এপ্রিল থেকে সীমিত করা হয় ফেরি চলাচল। লকডাউনের শুরুতে দিনের বেলায় দুই থেকে তিনটি ফেরি ছাড়া হলেও শুক্রবার থেকে যাত্রী ও জরুরি প্রয়োজনে আসা যানবাহনের চাপ বেশি থাকায় প্রায় সব কটি ফেরি চলাচল করছে।
জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়াত আহম্মেদ মুঠোফোনে বলেন, “এনায়েতপুরী রো রো ফেরিতে (বড় ফেরি) ইচ্ছা করে মানুষ তোলা হয়নি। এখানে যাত্রীর চাপ প্রচণ্ড বেশি ছিল। দেড় হাজারের বেশি যাত্রী ছিল। এত যাত্রী কোনোভাবেই কন্ট্রোল করা যাচ্ছিল না। ঘাটে তখন আমাদের লোকজনসহ মুন্সিগঞ্জের এএসপি, ওসি ছিলেন। তাঁরাও কন্ট্রোল করতে পারেননি। এত পরিমাণ যাত্রী কন্ট্রোল করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই ফেরিটি পুরো ভরা ছিল। কোনো যানবাহন তোলাও সম্ভব হয়নি।“
চলাচলরত একটি ফেরির মাস্টার ফজলুল করিম বলেন, “আজ (শুক্রবার) ২৪ রোজা। ঈদের এখনো পাঁচ থেকে ছয় দিন বাকি। আগে ঈদের দুই থেকে তিন আগে যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড় হতো। এখন ঈদের পাঁচ-ছয় দিন আগেই যাত্রীদের ভিড়। সবাই আগে আগে বাড়ি ফিরছে। কারও মধ্যে করোনা নিয়ে কোনো প্রকার আতঙ্ক নেই, ভয় নেই।“
শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাংলাবাজার ফেরিঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা থেকে আসা দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যাত্রীর ভিড়। শিমুলিয়া থেকে আসা প্রতিটি ফেরিতে গাদাগাদি করে দাঁড়ানো মানুষ। এমন অবস্থা, ফেরিতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। শিমুলিয়া থেকে আসা ফেরিগুলোয় যানবাহনের তুলনায় মানুষের ভিড়ই অনেক বেশি। যাত্রীরা ফেরি থেকে নেমে মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাহিন্দ্র, নছিমন, করিমন, পিকআপ ভ্যানসহ বিভিন্ন মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে।
মাদারীপুরগামী এক যাত্রী বলেন, “ঢাকা থেকে কিছুটা পথ বাসে। তারপর সিএনজি ও ভাড়ার মোটরসাইকেলে করে ঘাট পর্যন্ত। ঢাকা থেকে শিমুলিয়া ৭০ টাকার ভাড়া পড়ল ৪৫০ টাকা। গাদাগাদি করে ফেরিতে পার হয়েও ভোগান্তি। বাংলাবাজার ঘাটে গাড়ি নেই। যেসব যানবাহন চলে, তা–ও অতিরিক্ত ভাড়া। এভাবে কী আর লকডাউন চলে। কোনো কিছুই তো নিয়ন্ত্রণে নেই।“
ফেরিতে যানবাহনের চেয়ে যাত্রীর ভিড়ই বেশি। বেলা ১১টার দিকে আসা এনায়েতপুরী নামের ফেরিতে কয়েকটা মোটরসাইকেল ছাড়া সবই ছিল যাত্রী। দেড় থেকে দুই হাজার যাত্রী নিয়ে শিমুলিয়া ছাড়ে ফেরিটি। যানবাহনশূন্য ফেরি সচরাচর দেখা যায় না।