সাকিবের চোখে আইপিএল, হারের বৃত্তে বাংলাদেশ
প্রতিপক্ষ দলে অভিষিক্ত এক বাঁহাতি স্পিনার। দুই ইনিংসেই তাঁর সামনে খাবি খেল দল। ওদিকে নিজ দলের প্রাণভোমরা ‘সাকিব আল হাসান’ সামর্থ্যে সেই বোলারের চেয়েও যোজন যোজন ব্যবধানে এগিয়ে। কিন্তু পাশের পাড়ায় খেলতে যাওয়ায় মাথা চাপড়ানো ছাড়া উপায় নেই। অধিনায়কের মনে শূন্যতাবোধের সৃষ্টি হওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। অমন উইকেটে সাকিবের ব্যাটিংয়ের মূল্যের কথা না হয় তোলাই থাকল।
বাজে পারফরম্যান্সের জন্য নিয়মিত সুযোগ পাচ্ছেন না দলে। শেষ কয়েক ম্যাচে ডাগআউটে বসে আর সবার মতোই খেলা দেখে সময় কেটেছে। অনুশীলনে ব্যস্ত না থাকলে হোটেলে নিজের কামরায় সাকিব নিশ্চয়ই পাল্লেকেলে টেস্ট দেখেছেন। আর সরাসরি দেখার সুযোগ না পেলে হাইলাইটসে মন ভরেছেন। প্রভিন জয়াবিক্রমা আর তাঁর পারফরম্যান্স দেখে ভালো বোধ করার কথা নয়।
পাল্লেকেলেতে দ্বিতীয় টেস্টে যাঁরা (স্পিনার) ছিলেন, তাঁদের ব্যর্থতা অথবা সাফল্যের ঘাটতিই সাকিবকে মনে করতে বাধ্য করছে। শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসে ৭২ রানে ৫ উইকেট নেওয়া তাইজুল ইসলামকে নিয়েই কথাটা তোলা যায়। তাইজুল ভালো বল করেছেন। সেটি চতুর্থ দিনে উইকেট ভাঙতে শুরুর পর। কিন্তু এ ম্যাচে ১১ উইকেট নেওয়া জয়াবিক্রমার সঙ্গে বোলিংয়ে বুদ্ধির ব্যবহারের পার্থক্যে প্রমাণ ব্যবধান।
প্রথমেই বলের গতি। ভঙ্গুর ও বাঁক নিচ্ছে এমন উইকেটে একটু জোরের ওপর বল করলে প্রত্যাশিত বাঁকটুকু মেলে না। আস্তে ছাড়তে হয় একটু ঝুলিয়ে। তাতে ব্যাটসম্যানের বলের ওপর চোখ রাখতে যেমন সমস্যা, তেমনি প্রচুর বাঁকও নেয় এবং বল ওঠেও—বিশেষ করে আঙুলের পেছন থেকে বল ছাড়লে।
এবার তাইজুল ও জয়াবিক্রমার অ্যাকশনে আসা যাক। তাইজুলের বোলিং অ্যাকশন অন্য যেকোনো বাঁহাতি স্পিনারের চেয়ে দ্রুতগতির। তাই বোলিংয়ে গড় গতিবেগও ঘণ্টায় প্রায় ৮৫ কিলোমিটার। ওদিকে জয়াবিক্রমা গড়ে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার বেগে বল করেছেন। উইকেট থেকে সাহায্য আদায় করে নেওয়া যদি যোগ্যতা হয়—তবে সেই মানদণ্ডে ৩৩ টেস্ট খেলা তাইজুলের তুলনায় প্রথম টেস্ট আর মাত্র ১১তম দীর্ঘ ব্যাপ্তির ম্যাচ খেলতে নামা জয়াবিক্রমা এগিয়ে বুদ্ধির মারপ্যাঁচে।
বোলিং ক্রিজে কোণের ব্যবহারেও এগিয়ে ছিলেন জয়াবিক্রমা। তাইজুল বেশির ভাগ সময়ই ক্রিজের মাঝ থেকে বল করে গেছেন। স্টাম্প ঘেঁষে কিংবা ক্রিজের প্রস্থ ব্যবহার করে বাঁকে অদল-বদল আনার চেষ্টাও করেননি। জয়াবিক্রমা সেটি করেছেন বলেই একই জায়গার বল একেক রকম বাঁক নিয়েছে, তাতে বিভ্রান্ত হয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।