কঠোর লকডাউন  ও  আইনের প্রয়োগ

এবারের সীমিত লকডাউন জারি হয়েছে এক সপ্তাহের জন্য। বলা হচ্ছে, পরিস্থিতি বুঝে তা বাড়ানো হতে পারে। পরিস্থিতি ভালো নয়, কাজেই হয়তো লকডাউনের মেয়াদ বাড়বে। গত বছরের লকডাউনে প্রান্তিক মানুষ দুর্দশায় পড়েছিলেন। দুর্দশা লাঘবে সরকারি প্রচেষ্টা খুব একটা সফল হয়নি, রিলিফের চাল-ডাল প্রচলিত নিয়মে অনেকটাই স্থানীয় প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলের প্রান্তিক কর্মজীবীরা রোজগারের ব্যবস্থা হারিয়ে এবারও কষ্টে পড়বেন।

সরকারি নির্দেশনায় আরও বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, যা যথাযথভাবে পালিত হচ্ছে না। বিকেলে হাঁটতে বেরিয়ে পথেঘাটে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ মানুষকে দেখি মুখোশ ছাড়া বা থুতনিতে মুখোশ লাগিয়ে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের নিবৃত্ত করার বা জরিমানা করার কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ল না।

তবে এখানে যদির কিছু নেই, পাঁচ হাজারের বেশি সংক্রমণ হচ্ছে বেশ কদিন ধরেই। এক মাস ধরে দৈনিক সংক্রমণ পাঁচ হাজার হলে দেড় লাখ রোগী হবে, এরপর কিন্তু সংখ্যাটা আর বাড়বে না। কারণ, এর মাঝে এক থেকে দেড় শতাংশ মারা যাবেন এবং বাকিরা পর্যায়ক্রমে সুস্থ হতে থাকবেন।

দৈনিক সংক্রমণ না কমলেও রোগীর সংখ্যা আর বাড়বে না, এটা সহজ হিসাব। আর দেড় লাখ রোগীর মাঝে অধিকাংশই হালকা অসুস্থ হয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়ে যাবেন, বড়জোর শতকরা ২০ ভাগ বা মোট ৩০ হাজার রোগীর হাসপাতাল সেবা লাগবে। ১৮ কোটি লোকের দেশে ৩০ হাজার রোগীর জন্য হাসপাতাল সেবা দেওয়ার সামর্থ্য থাকা উচিত পুরো ঢাকা শহরকে হাসপাতাল না বানিয়েও।

পরিস্থিতি যখন আবার খারাপের দিকে, তখন আইসিইউ, অক্সিজেন ও ন্যাজাল ক্যানোলার অভাব স্বাস্থ্যকর্মীদের দুশ্চিন্তায় ফেলছে। এই অভাব দূর করে সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট সময় পেয়েছিলাম আমরা, যার সঠিক ব্যবহার হয়নি। অর্থহীন বাক্যব্যয় না করে, এখনো এসবেই দ্বিগুণ মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন দেশের স্বাস্থ্য নেতৃত্বের।