ঘুড়ি উৎসবে পুরান ঢাকা
বাংলাদেশের প্রাচীন উৎসবগুলোর মধ্যে সাকরাইন অন্যতম। এটি ঘুড়ি উৎসব বা পৌষসংক্রান্তি নামেও পরিচিত। পৌষ মাসের শেষে মাঘ মাসের প্রথম দিনে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব পালন করা হয়। ১৪ জানুয়ারি পুরান ঢাকায় ঘুড়ি ওড়ানোর সাকরাইন উৎসব। করোনা সংক্রমণের মধ্যে উৎসব আয়োজনে শুরু হয়েছে তোড়জোড়। উৎসবটি এখন শুধু পুরান ঢাকার বাসিন্দাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। রাজধানীতে বসবাসকারী সব মানুষের উৎসবে পরিণত হয়েছে। এমনকি ঢাকার বাইরেও এটি উদ্যাপন করা হয়।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে উৎসবের জৌলুশ। শেষ বিকেলে শীতের হাওয়ায় ঘুড়ির কাটাকাটি খেলা। আর সন্ধ্যায় আধুনিক সাউন্ড সিস্টেমের সঙ্গে আগুন নিয়ে খেলা, আতশবাজি আর ফানুসে আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে রাতের আকাশ। এ ছাড়া উৎসবের দিনদুপুরে মন্দিরগুলোয় হবে, ‘বুড়ো-বুড়ি’ পূজা।
করোনা পরিস্থিতিতে উৎসব একইভাবে হবে কি না জানতে চাইলে শাঁখারীবাজারে ঘুড়ি-নাটাই কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, “বাড়ির ছাদে আর নিজেদের মধ্যে উৎসব উদ্যাপন করায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কম।”
গতকাল রোববার পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, লক্ষ্মীবাজার, নারিন্দা, সূত্রাপুর, লালবাগ এলাকায় ঘুরে উৎসব আয়োজনের প্রস্তুতি চোখে পড়ে। পাড়া ও মহল্লার ছোট দোকানেও বিক্রি করা হচ্ছে ঘুড়ি। অনেকেই আবার উৎসব উপলক্ষে ঘুড়ি বিক্রির মৌসুমি ব্যবসা শুরু করেছেন।
দোকানদারেরা জানালেন, চোখদার, পানদার, কথাদার, মালাদার, পঙ্খিরাজ, চলনদার, পেটিদার, পাংদার, প্রজাপতি, দাপস, বাদুড়, চিলসহ নানান নামের বিভিন্ন নকশা ও আকৃতির ঘুড়ি পাওয়া যায়। সাধারণ ঘুড়িগুলো আকৃতি ভেদে ৫ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হয়। বিভিন্ন নকশা ও বিদেশি ঘুড়িগুলোর দাম ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। নাটাইয়ের দাম ১৫০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। মাঞ্জা দেওয়া ভারত বা চীনের সুতার দাম এক হাজার গজের দাম পড়ে ১৫০ টাকা। তবে পরিমাণে বেশি নিলে দামও কমে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন প্রথমবারের মতো এই উৎসব আয়োজন করছে। ‘এসো ওড়াই ঘুড়ি, ঐতিহ্য লালন করি’ স্লোগান সামনে রেখে সংস্থাটির ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক স্থায়ী কমিটি সব ওয়ার্ডে উৎসব পালন করবে। বেলা দুইটা থেকে শুরু হয়ে রাত আটটা পর্যন্ত উৎসব চলবে।