সমাজসেবা সম্মাননা
করোনাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি চাল বিতরণে অনিয়ম করা আওয়ামী লীগের নেতা শাহ আলমকে সমাজসেবা সম্মাননা দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা হাজির করেছে সম্মাননা কমিটি। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে ওই কমিটি। সেখানে কমিটির চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল–মামুন সরকার বলেন, শাহ আলমকে সম্মাননা দেওয়ার ক্ষেত্রে কমিটির সবার ঐকমত্য ছিল।
শাহ আলম পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউতলী এলাকার বাসিন্দা। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক। তিনি একই সঙ্গে এফবিসিসিআইয়ের সদস্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক। তাঁর বিরুদ্ধে চাল বিতরণে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে আল–মামুন সরকার বলেন, করোনার সময়ে সরকারি চাল নিয়ে অনিয়মের বিষয়ে শাহ আলমের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদ সঠিক নয়।
আল-মামুন সরকার বলেন, ”খাদ্যশস্য বিতরণ নীতিমালায় ডিলার বা ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পরিবারের কোনো সদস্য পাওয়ার উপযুক্ত হলে তালিকাভুক্ত করা যাবে না, এ রকম নির্দেশনা ছিল না। অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তালিকা সংশোধন করা হয়। চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। আর তাঁর প্রস্তাবে শাহ আলমের ডিলারশিপ বাতিল করা হয়। পরে শাহ আলম উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন, যা এখনো বিচারাধীন।”
আল–মামুন সরকার আরও বলেন, ”সংবাদ দেখে জেলা প্রশাসক সমাজসেবার উপপরিচালককে শোকজ করেছেন। কমিটির সবার সম্মতিক্রমে সম্মাননার জন্য শাহ আলমের নাম প্রস্তাব করা হয়। বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়কেও অবহিত করা হয়। এ ব্যাপারে তাঁর মৌখিক সম্মতি ছিল। এরপরই ২ জানুয়ারি জাতীয় সমাজসেবা দিবসে শাহ আলমকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এর বেশি কিছু ব্যাখ্যা করে নতুন কোনো বিতর্ক সৃষ্টি করতে চাই না।”
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান বলেন, ‘শাহ আলমকে সম্মাননা প্রদানের বিষয়টি আমি জানতাম না। কাউকে সম্মাননা দিতে হলে একটি কমিটি ও দাপ্তরিক প্রক্রিয়া থাকতে হবে। মুখের কথায় তো আর হবে না। যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা যথাযথ ও সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। তাই আমি চিঠি লিখেছি। এখন আর অহেতুক কথা বাড়িয়ে লাভ নেই।’
জেলা প্রশাসন ও খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনার সময় বিশেষ ওএমএস কার্যক্রমের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায় চাল দিতে ছয় হাজার দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের তালিকা করা হয়। তালিকায় শাহ আলমের স্ত্রী মমতাজ আলম, মেয়ে আফরোজা বেগমসহ তাঁর পরিবারের ১৩ জন সদস্যের নাম পাওয়া যায়। গত বছরের ১৩ মে জেলা ওএমএস কমিটির সভায় শাহ আলমের ওএমএস চালের ডিলারশিপ বাতিল করা হয়।