আজ রবিবার এর ফুলি
‘আজ রবিবার’ ধারাবাহিক নাটক দিয়ে দর্শকদের কাছে পরিচিতি পেয়েছিলেন ফুলি চরিত্রটি । নাটকের ফুলি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন নাসরিন নাহার। অভিনয়ে ভালো করার সম্ভাবনা ছিল তাঁর। কিন্তু এগোননি। নানা কারণে বিনোদন অঙ্গন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন নাসরিন।
নাসরিন জানান, ”টেলিভিশন মিডিয়ায় নিজেকে খাপ খাওয়াতে না পেরে সরে আসেন। পরিবার নিয়েও ব্যস্ততা বাড়তে থাকে। থিয়েটারেও সময় দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি চাইলে নিয়মিত অভিনয়টা চালিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু টেলিভিশনে অভিনয় করতেই হবে, সে রকম কোনো ভাবনা আমার ছিল না। আবার আমার স্বামী ফারুক নিয়মিত অভিনয় করত। তাঁর ও পরিবারের জন্য স্যাক্রিফাইস করতে হয়েছে। আমি চেয়েছি একজনই নিয়মিত অভিনয় করুক। দুজন অভিনয় করলে হয়তো সংসারটা হতো না।”
টিভি নাটকে অভিনয় না করলেও এখনো নিয়মিত থিয়েটারে অভিনয় করেন নাসরিন। ‘চাকা’, ‘যৈবতী কন্যার মন’, ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’, ‘ধাবমান’, ‘উষা উৎসব’, ‘কেরামত মঙ্গল’, ‘কীর্তনখোলা’, ‘প্রাশ্চ্য’সহ বেশ কিছু মঞ্চনাটকে তিনি অভিনয় করেছেন। এখনো নিয়মিত শিল্পকলা একাডেমির মহড়ায় যোগ দেন। টেলিভিশন নাটকে অভিনয়ের আগ্রহ কম তাঁর, তবে টিভি নাটক তিনি ভীষণ মিস করেন।
নাসরিনের স্বামী অভিনেতা ফারুক আহমেদ। ১৯৯৩ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। ঢাকা থিয়েটারে ‘সংলাপ’ নাটকের মহড়ার সময় দুজনের পরিচয়। প্রথম দেখায় ফারুক আহমেদ তাঁর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন। শুরুতে তাঁদের বিয়েতে সবাই রাজি থাকলেও নাসরিন নিজেই রাজি ছিলেন না। এই অভিনেত্রী বলেন, ‘নিজেদের দলের ছেলেকে বিয়ে করলে সবাই কী বলবে! তা ছাড়া আমার বড় বোনেরও তখন বিয়ে হয়নি।
সেসব কারণেই বিয়েতে রাজি হইনি। পরে থিয়েটারের জামান ভাই, দুলাল ভাই, কামাল ভাইসহ সবাই মিলে আমাকে বোঝালেন, ফারুক তো অন্য কাউকে বিয়ে করবে।’ সে সময় নাসরিন ভেবেছিলেন, এই অভিনেতাকে বিয়ে করলে অন্তত নাটকটা ঠিকঠাক করা যাবে। তা ছাড়া ছেলে হিসেবে ফারুক আহমেদও চমৎকার।
নাসরিন নাহারের অভিনয়ের হাতেখড়ি শৈশবে। শিশুদের নাটকের দল ‘সংলাপ’-এ কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। পরে ১৯৮৬ সালে যোগ দেন ঢাকা থিয়েটারে। সেখান থেকেই সুবর্ণা মুস্তাফার পরিচালনায় ‘তিয়াস’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। এরপর আরও বেশ কিছু নাটকে অভিনয়ের পর ডাক পেয়েছিলেন ‘আজ রবিবার’ নাটকে। তিনি জানান, অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফার কাছ থেকেই তিনি এ নাটকে অভিনয়ের প্রস্তাব পান। পরে টানা এক মাসে শুটিং শেষ করেন। নাটকটির শুটিংয়ের শুরু থেকে প্রায় প্রতিটা দিনই ছিল অনেক স্মরণীয়। স্মৃতি হাতড়ে তিনি জানান, একই মাসে তাঁর নিজের এবং হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন হওয়ায় শুটিং সেটে একই সঙ্গে তাঁর জন্মদিনের কেক কাটা হয়েছিল।