সারা বিশ্বে ইলিশ রপ্তানি

২৬টি প্রতিষ্ঠান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে মধ্যপ্রাচ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজারে ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন এর জন্য। মৎস্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক হলেও তা আছে ১২ প্রতিষ্ঠানের, বাকি ১৪ প্রতিষ্ঠানের নেই। এবার ইলিশ কি এখন ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোতেও যাবে—এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে বছর বছর ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে বলে সমস্যা নেই। এতে কিছু বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে—এমন আশার কথাই বলছেন তাঁরা।

মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মতে, রপ্তানির অনুমোদন শেষ পর্যন্ত দেওয়া হবে কি না, তা এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর। সাধারণত দেশের সীমানা ছাড়িয়ে ইলিশ ভারত পর্যন্ত যায়। তা-ও পূজা-পার্বণ উপলক্ষেই ভারতে ইলিশ রপ্তানি করে বাংলাদেশ। তবে পুরো ভারতে নয়, পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায়। এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাতেও (ইউএই) কিছু ইলিশ রপ্তানি হয়।

মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩ লাখ ৮৭ হাজার টন ইলিশ ধরা পড়েছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা বেড়ে হয়েছে ৫ লাখ ৩৩ হাজার টন।

ইলিশ রপ্তানির জন্য আবেদনকারীদের মধ্যে মৎস্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স নেওয়া ১২ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে: ঢাকার ওয়ারীর অর্পিতা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ও উত্তরার কাশফি সি ফুড, চট্টগ্রামের মাসুদ ফিশ প্রসেসিং অ্যান্ড আইস কমপ্লেক্স,আনরাজ ফিশ প্রোডাক্টস ইন্ডাস্ট্রিজ ও আর্ক সি ফুডস, খুলনার আছিয়া সি ফুডস, ছবি ফিশ প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ, মডার্ন সি ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ ও ব্রাইট সি ফুডস,বাগেরহাটের ফকিরহাটের বাগেরহাট সি ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ, বরিশালের মাহিমা এন্টারপ্রাইজ এবং পটুয়াখালীর নিরালা সি ফুডস।

মৎস্য রপ্তানি করতে হলে মৎস্য অধিদপ্তরের লাইসেন্সের সঙ্গে ট্রেড লাইসেন্স; আয়কর, ভ্যাট ও ইআরসি সনদ এবং বিক্রয় চুক্তি ইত্যাদি থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ইলিশ রপ্তানির অনুমতি চেয়ে আবেদন করা ২৬ প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগেরই সব সনদ নেই। খান ইন্টারন্যাশনাল, ঢাকার ইউনিয়ন ভেঞ্চার ও নুবাইদ করপোরেশন এবং চট্টগ্রামের নিহাও ফুড কোম্পানি ও গ্রিন ওয়ার্ল্ড ইমপেক্স তো আবেদনপত্র ছাড়া কোনো কাগজপত্রই জমা দেয়নি।

আংশিক কাগজপত্র থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে: ঢাকার নিজাম এন্টারপ্রাইজ, খুলনার জাহানাবাদ সি ফুডস, চট্টগ্রামের প্যাসিফিক সি ফুডস, বাগেরহাটের রূপসা ফিশ অ্যানআড এলাইড এবং বাংলাদেশি মালিকানাধীন সি মিলেনিয়াম ট্রেড (এম) এসডিএস, বিএইচডি মালয়েশিয়া।

ইলিশ রপ্তানির জন্য আবেদনকারী অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে পিবিএ ইন্টারন্যাশনাল, আরাবি ইন্টারন্যাশনাল, এ এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এবং ইউটেক সিস্টেমস লিমিটেড।

আওয়ামী লীগের বরিশাল মহানগরের সাবেক শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক ও বরিশাল জেলা মৎস্য সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নিরব হোসেন ওরফে টুটুল গত মাসে এক হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন চেয়ে বাণিজ্যসচিব মো. জাফর উদ্দীন বরাবর আবেদন করেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম ‘মাহিমা এন্টারপ্রাইজ’। তিনিও ভারত, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে ইলিশ রপ্তানি করতে চান। তাঁর আবেদনপত্রে সুপারিশ করেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মো. মোরাদ হাসান।