উইন্ডোজ ১১
গত ২০ বছরেও মাইক্রোসফট পুরোপুরি বাতিল করেনি। থাকছে বেশ কিছু নতুন ফিচার। নতুনের পথে এগোতে হলে পুরনোকে ঝেড়ে ফেলতে হয়। বেশ কিছু পুরনো ফিচার বাদ পড়তে যাচ্ছে।উইন্ডোজ ১১ ব্যবহারকারীদের জন্য একেবারে বিনা মূল্যে দেবে মাইক্রোসফট। আগামী অর্থাৎ অক্টোবরের শেষে বা নভেম্বরে উইন্ডোজ আপডেটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের পিসিতে পৌঁছে যাবে উইন্ডোজ ১১। এর জন্য বাড়তি কিছু করতে হবে না।
চাইলে ব্যবহারকারীরা আগে থেকেই আপডেট অপশন থেকে ১১ আপগ্রেড বন্ধ করে রাখতে পারবেন। নতুন অপারেটিং সিস্টেম শুরুতেই ব্যবহার না করাই ভালো, বিশেষ করে যদি সে পিসি হয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য। আলাদা করে মাইক্রোসফট থেকে সরাসরি লাইসেন্স কিনে ডাউনলোড করেও ইনস্টল করা যাবে উইন্ডোজ ১১, ঠিক বর্তমানের মতোই।
উইন্ডোজ ১১ ব্যবহারের জন্য হার্ডওয়্যারের চাহিদা। নতুন অপারেটিং সিস্টেম আর ৩২ বিট প্রসেসর সমর্থন করবে না। ২০ বছর ধরে মাইক্রোসফট ৩২ বিট সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে, যা অন্তত ২০২১ সালে আর মানানসই নয়।
যদিও মাইক্রোসফটের ওয়েবসাইট অনুযায়ী অন্তত ১ গিগাহার্জ গতির ডুয়াল কোর ৬৪ বিট প্রসেসর, ৪ গিগাবাইট র্যাম, ডাইরেক্ট এক্স ১২ সমর্থিত গ্রাফিকস এবং ৭২০ পিক্সেল রেজল্যুশনের ডিসপ্লে থাকলেই উইন্ডোজ ব্যবহার করা যাবে, কিন্তু বাস্তবে চিত্রটি কিন্তু ভিন্ন।
বর্তমানে মাইক্রোসফটের পেজ অনুযায়ী শুধু অষ্টম প্রজন্মের ইন্টেল কোর ও দ্বিতীয় প্রজন্মের এএমডি রাইজেন সিরিজের প্রসেসরসমৃদ্ধ পিসিতেই চলবে ‘উইন্ডোজ ১১’। অর্থাৎ মাইক্রোসফটের বর্তমান ফ্ল্যাগশিপ সারফেস স্টুডিও ২-তেও চলবে না উইন্ডোজ ১১।
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো উইন্ডোজের স্টার্ট বাটন এবং মেন্যু ডিসপ্লের নিচের অংশের বাঁ কোনায় নয়, মাঝখানে থাকবে। স্টার্ট মেন্যু থেকে বাদ যাচ্ছে লাইভ টাইলস, তার বদলে মেন্যুতে পিন করা অ্যাপ, সর্বশেষ ব্যবহৃত ডকুমেন্টস, অ্যাপ মেন্যু এবং সার্চ বার দেখা যাবে।
মেইল অ্যাপ থেকে সরাসরি করা যাবে ভিডিও কল, টিমসের মেসেজ থেকে সরাসরি ক্যালেন্ডারে চলে যাবে মিটিং বা ডেডলাইনের সময়সূচি। ডেস্কটপ বা টাস্কবার থেকেই এক ক্লিকে করা যাবে ভিডিও কনফারেন্স। এরূপ আরো নানা ধরনের সুবিধাই থাকবে উইন্ডোজের সঙ্গে, যাতে ব্যবহারকারীরা কাজ করতে পারেন স্বাচ্ছন্দ্যে।
চলবে অ্যানড্রয়েড অ্যাপও ‘উইন্ডোজ ১১’ ব্যবহারকারীরা সরাসরি অ্যানড্রয়েড অ্যাপ ও গেম চালাতে পারবেন তাঁদের পিসিতে। সরাসরি অ্যামাজন অ্যাপ স্টোর থেকে অ্যানড্রয়েড অ্যাপ ইনস্টল করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। তবে গুগল প্লেস্টোর যুক্ত করার ব্যাপারে এখনো কোনো কিছু জানা যায়নি, সম্ভাবনাও ক্ষীণ। তবে নিজে থেকে ব্যবহারকারীরা অ্যাপ ইনস্টল করতে পারবেন বলে জানা গেছে।
মাইক্রোসফট খুব জোর দিয়ে চেষ্টা করছে গেমিং দুনিয়ায় নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে। তাদের এক্সবক্স গেম পাস আলটিমেট সেবার মাধ্যমে নেটফ্লিক্সের মতো মাসিক চাঁদা দিয়ে শত শত গেম খেলা যাচ্ছে এক্সবক্স এবং পিসিতে। এবার গেম পাস সেবাটি উইন্ডোজের সঙ্গে আরো শক্ত করে যুক্ত করে দেওয়া হবে, যাতে গেম পাস থেকে বা এক্সবক্স স্টোর থেকে গেম খেলা যায় আরো সহজে। শুধু তা-ই নয়, পিসিটি যদি গেম চালানোর মতো শক্তিশালী না হয়ে থাকে, তাহলে নিজ থেকেই এক্সক্লাউডের মাধ্যমে গেমটি ক্লাউড সার্ভার থেকে চলবে, তার জন্য বাড়তি কোনো সেটআপেরও প্রয়োজন হবে না।