আমের যত পুষ্টিগুণ

মুখরোচক ফলের মধ্যে আম অন্যতম। তাই তো আমকে বলা হয় ফলের রাজা। আম খেতে ভালোবাসেন না, এমন মানুষ পাওয়া মুশকিল। কেবল স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় নয়, পাকা ও কাঁচা উভয় আমেই রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। কাঁচা বা পাকা দুই ধরনের আমই শরীরের জন্য ভালো। আম কাঁচা বা পাকা যা–ই হোক না কেন, পরিমিত গ্রহণ করলে শরীরের ওপর তেমন কোনো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে না। কাঁচা কিংবা পাকা আমপ্রেমীদের কাছে আম মানেই প্রিয় একটি ফল।

আমের যত গুণ 
  • পাকা আম আমাদের ত্বক কে সুন্দর, উজ্জ্বল ও মসৃণ করে। শুধু তাই নয়, এটি আমাদের ত্বকের ভেতর ও বাইরে থেকে উভয়ভাবেই সুন্দর রাখতে সাহায্য করে। আম আমাদের ত্বকের লোমের গোড়া পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ও ব্রণের সমস্যা সমাধানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

 

  • তাজা আম পটাশিয়ামের ভালো উৎস। পটাশিয়াম মানবদেহের কোষ ও তরলের উপাদান, যা রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

 

  • গাছপাকা আমে পর্যাপ্ত পরিমাণে খনিজ লবণের উপস্থিতিও রয়েছে । আমাদের শরীরের দাঁত, নখ, চুল ইত্যাদি মজবুত করার জন্য আমের খনিজ লবণ উপকারী ভূমিকা পালন করে।

 

  • আমের উপকারিতা গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে আমের পুষ্টি উপাদান। পাকা আমের আঁশে কিছু উপাদান যেমন- ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ থাকায় তা হজমে সহায়তা করে থাকে। আমে আছে প্রচুর পরিমাণে এনজাইম এটা আমাদের শরীরের প্রোটিন অণুগুলো ভেঙ্গে ফেলতে সাহায্য করে যা হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

 

  •  আমে প্রায় ২৫ রকমের বিভিন্ন কেরাটিনোইডস উপকারী ব্যাকটেরিয়া আছে যা আপনার ইমিউন সিস্টেমকে সুস্থ ও সবল রাখে।

 

  • আমে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন- বি কমপ্লেক্স। এই ভিটামিন আমাদের শরীরের স্নায়ুগুলোতে অক্সিজেনের সরবরাহ সচল রাখতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরকে রাখে পুরোপুরি সতেজ। যার ফলে খুব দ্রুত ঘুম আসতে সাহায্য করে।

 

  • আমে রয়েছে বেটাক্যারোটিন, ভিটামিন ই এবং সেলেনিয়াম। এসব উপাদান পরিমাণে পর্যাপ্ত থাকায় পাকা আম হার্টের সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে।আমাদের হার্টকে সুস্থ ও সবল রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

 

  • আমে প্রচুর পরিমাণে এসিড থাকে যেমন- টারটারিক এ্যাসিড, ম্যালিক এ্যাসিড ও সাইট্রিক এ্যাসিড যা আমাদের শরীরে অ্যালকালাই বা খার ধরে রাখতে সহায়তা করে অনেকাংশেই।

 

  • আমের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কিনা শরীরের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। স্তন, লিউকেমিয়া, কোলন প্রোস্টেট ক্যান্সারের মত মারাত্মক ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। এতে প্রয়োজনীয় এনজাইমও পাওয়া যায়।

 

  • আপনি যদি প্রতিদিন এককাপ আম খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার শরীরে ভিটামিন ‘এ’ এর চাহিদার প্রায় পঁচিশ শতাংশের যোগান দিতে পারবে। ভিটামিন ‘এ’ আমাদের চোখের জন্য খুবই উপকারী। এটি আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং রাতকানা রোগ থেকে রক্ষা করে।

 

  • পাকা আম আমাদের শরীরের রক্ত পরিষ্কারে সহায়তা করে। আমের মধ্যে থাকা টারটারিক, ম্যালিক ও সাইট্রিক এ্যাসিড শরীরে অ্যালকোহল ধরে রাখতে সহায়তা করে।

 

  • আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি, পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমে ভিটামিন-সি এর পরিমাণ বেশি। যা আমাদের দাঁত ও হাড় গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

 

  • আম আমাদের শরীরের ক্ষয়রোধ করে। প্রতিদিন আম খেলে দেহের ক্ষয়রোধ হয় এবং স্থূলতা কমিয়ে শারীরিক গঠনে ইতি বাচক ভূমিকা পালন করে।

 

  • শুধু তাই নয়, আমের ভেষজ গুণ আমাদের স্কিন ক্যান্সারসহ ভিভিন্ন জটিল রোগ থেকে রক্ষা করে।

 

  • আমে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ সেই সাথে আরো আছে ফাইবার যা সিরাম কোলেস্টরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়, বিশেষ করে রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টরল যেমন কম ঘনত্বের লাইপোপ্রটিন এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আম খেলে হৃদয়ে ভালোবাসার জন্ম হয়। তাই এটাকে উন্নত বিশ্বে লাভ ফ্রুট(love fruit) বলে। সুতরাং মৌসুম থাকতেই প্রিয়জনকে বেশি বেশি আম উপহার দিন এবং নিজেও আম খান।