ঈদে গরু-ছাগলের মাংস খাওয়ার ধুম

অনেকের ধারণা, গরুর মাংস ক্ষতিকর খাবার, তাই এড়িয়ে চলা উচিত। বিশেষ করে এটি কোলেস্টেরল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। অথচ সঠিক তথ্য হলো, গরুর মাংসের অনেক উপকারী দিকও আছে। পরিমিত পরিমাণে সঠিকভাবে গরুর মাংস খেলে যে পরিমাণ পুষ্টি মেলে তা অন্য পুষ্টিকর খাবারের তুলনায় নগণ্য।

খাওয়ার পরিমাণ

দৈনিক ৮৫ গ্রাম গরুর মাংস খেলে মাত্র ১০ শতাংশ ক্যালরি মিলবে। গরুর শরীরের দুটি অংশে চর্বির পরিমাণ অনেক কম থাকে। একটি হলো পেছনের রানের ওপরের ফোলা অংশের মাংস, যাকে রাউন্ড বলা হয়। অন্যটি পেছনের দিকের ওপরের অংশের মাংস, যাকে সেরলয়েন বলা হয়।

কোলেস্টেরলের সীমা

মাংসের বাইরে যে চর্বি লেগে থাকে সেগুলো রান্নার আগে কেটে ফেলে দিলে কোলেস্টেরলের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা যায়।৮৫ গ্রাম সেরলয়েন অঞ্চলের মাংসে কোলেস্টেরলের মাত্রা ৪৭ মিলিগ্রাম এবং ৮৫ গ্রাম রাউন্ড অঞ্চলের মাংসে কোলেস্টেরলের মাত্রা ৫৩ মিলিগ্রাম। একজন সুস্থ মানুষের কোলেস্টেরলের দৈনিক নিরাপদ মাত্রা হলো ৩০০ মিলিগ্রাম এবং হৃদরোগীর জন্য ২০০ মিলিগ্রাম।

প্রয়োজনীয় পুষ্টি

শরীরের জন্য যা যা প্রয়োজনীয় পুষ্টি দরকার সবগুলাই রয়েছে গরুর মাংসে। প্রোটিন, জিংক, ভিটামিন বি১২, সেলেনিয়াম, ফসফরাস, নায়াসিন, ভিটামিন বি৬, আয়রন ও রিবোফ্লাভিন।প্রোটিন পেশি গঠনে ভূমিকা রাখে, জিংক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ফসফরাস দাঁত ও হাড়ের শক্তি বাড়ায়, আয়রন পেশিগুলোতে অক্সিজেন প্রবাহে সহায়তা করে এবং ভিটামিন বি১২ খাদ্য থেকে শক্তি জোগান দেয়।

শিশু বা টিনএজারদের শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে গরুর মাংসের তুলনা নেই।৮৫ গ্রাম গরুর মাংসে আছে ৯-১৩ বছর বয়সী শিশুর দৈনিক চাহিদার ১২৫ শতাংশ ভিটামিন বি১২, ৯০ শতাংশ প্রোটিন, ৭৪ শতাংশ জিংক, ৪২ শতাংশ সেলেনিয়াম, ৩২ শতাংশ ভিটামিন বি৬, ৩২ শতাংশ আয়রন, ২৯ শতাংশ নায়াসিন, ২৩ শতাংশ রিবোফ্লাভিন এবং ১৬ শতাংশ ফসফরাস।

অতিমাত্রায় খাওয়ার ঝুঁকি

  • গরুর মাংসে যে কোলেস্টেরল থাকে সেটি বেশি বেড়ে গেলে হার্টের শিরায় জমে রক্ত জমাট বাঁধিয়ে দেয়। এতে হার্টে পর্যাপ্ত রক্ত চলাচল করতে পারে না, অক্সিজেনের অভাব হয়। ফলে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়।

 

  • গরুর মাংসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম, যা রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। এ থেকে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি জটিলতা দেখা দিতে পারে।

 

  • গরুর মাংস বেশি খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকিও বেশি থাকে।