টিকটক ও ফেসবুকের ফাঁদে পাঁচ বছরে ৫০০ তরুণী পাচার
গত পাঁচ বছরে ৫০০ মেয়েকে পাচার করা হয়েছে ,সামাজিক মাধ্যেম টিকটক ও ফেসবুক ব্যবহার করে , যাদের বয়স ১৮ থেকে ২২ বছর। গত আট বছরে এই সংখ্যা ১০০০ যা আগের তুলনায় অনেক বেশী। গতকাল মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অপব্যবহার: নারী ও মেয়ে শিশুদের পাচার রোধে করণীয় শীর্ষক এক ওয়েবিনারে র র্যাবের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ কথা জানানো হয়।
ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)-এর ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বলেন, বিটিআরসি ইতিমধ্যেই টিকটক ও ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন আপত্তিকর কনটেন্ট সরিয়ে ফেলার জন্য বলেছে। তিনি জানান, খুব দ্রুত চালু হচ্ছে ন্যাশনাল ইকুইভমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর), যার মাধ্যমে মোবাইল সেট ব্যবহারকারীর পরিচয় বোঝা যাবে। টিকটক, ফেসবুক এগুলো বিটিআরসি চাইলেই বন্ধ করতে পারে না। তবে আমরা মনে করি এ ব্যাপারে সমাজের সবার সচেতনতা বাড়াতে হবে।
আলোচনায় বলা হয়, বাংলাদেশে টিকটক/লাইকি ব্যবহার করে তারকা হওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েদের ফাঁদে ফেলা হয়। যেহেতু লাইকি ও টিকটকের জন্য খুব সামান্য সেটআপ ও দক্ষতা দরকার হয়, তাই স্বল্প শিক্ষিত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা খুব সহজেই সাইবার-বিনোদন জগতে প্রবেশ করতে পারে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশ তেজগাঁও জোনের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট সালমা আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিমিনোলজি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক উম্মে ওয়ারা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম।
মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, আমরা মনে করেছিলাম এসব মজার অ্যাপগুলো দুনিয়াব্যাপী চলছে, এখানেও সেইভাবেই চলছে। কিন্তু পরে দেখলাম তরুণদের একটা গ্রুপ এগুলো ব্যবহার করে সংগঠিত হয়ে অপরাধ করছে।
অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন, যে মেয়েগুলো ফিরে আসে, তাদের নিরাপত্তা কোথায়? তাদের কত দিন সেইফ হোমে রাখা সম্ভব? উম্মে ওয়ারা বলেন, মেয়েরা যদি এই চক্রের হাত থেকে বেঁচে ফিরেও আসে, সমাজ তাদের নষ্ট মেয়ে বলে। এখানে ভিকটিম ও উইটনেস প্রটেকশন অ্যাক্টকে দ্রুত কার্যকর করতে হবে। শাহীন আনাম বলেন, সরকার কিংবা পুলিশ একা এদের রোধ করতে পারবে না। আমাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। কারণ প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বাড়বেই।