কুষ্টিয়ার ৩৫ মণ ওজনের পাগলু

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার বাহিরচর ইউনিয়নের ১৬ দাগ পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ টিপুর বাড়িতে জন্ম হয় পাগলুর। একই সময়ে টিপুর স্ত্রীও এক সন্তান জন্ম দেন। ছোট্ট গরুটিকেও পরিবারের সদস্যদের মতো লালন–পালন শুরু করেন। ছোটবেলা থেকেই লাফালাফি করে। এ জন্য নাম রাখে পাগলু। পাগলু নাম ধরে ডাকলেই নাচের ভঙ্গিমা করে।

বেশ সুন্দর, মসৃণ শরীর ফিজিয়ান প্রজাতির গরু পাগলু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে পছন্দ করে।বিশাল দেহে সাদা-কালো ছোপ ছোপ দাগ। ওজন হয়েছে প্রায় ৩৫ মণ। কাছে গিয়ে পাগলু বলে ডাকতেই লাফালাফি শুরু করল গরুটি। বড় আদরের শখের গরুটি ঘিরে কুষ্টিয়ার টিপু-পাপিয়া দম্পতির গল্পের শেষ নেই। পরিবারের বাকি চার সন্তানের মতোই লালন–পালন করছেন গরুটি।

পাগলুর তিন বেলা খাবার তালিকায় ঘাসের পাশাপাশি কলা, আপেল, আঙুর, মাল্টা, আখের গুড়ের শরবত, ওরস্যালাইন ও ভুসি। দুই বেলা গোসল করানো, সময়মতো খাবার দেওয়া, মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা করতে মশারি টানানো, গরমের সময় শরীর শীতল রাখতে বাতাসের ব্যবস্থা করা এবং রাতের বেলায় পালাক্রমে জেগে থেকে পাহারা দেন পরিবারের সদস্যরা। তিন বছরে তার ওজন হয়েছে প্রায় ৩৫ মণ।

টিপুর স্ত্রী পাপিয়া খাতুন বলেন, “প্রতিদিন সকালে পাগলুর ডাকে ঘুম ভাঙে। একবার টিপু পাগলুকে মেরেছিল, এ জন্য দুই দিন তিনি কোনো খাবার খাননি। পাগলুর খাবার নিয়ে তার সামনে গেলে শুরু হয়ে যায় তার নাচন। পাগলু খাবারের ওপর ঝাঁপিয়ে পাড়ে। তার মায়াভরা মায়াবী চোখ দেখলে মায়ায় ভরে ওঠে।পাগলুর জন্মের সময় আমার ছেলে আবদুল্লাহর জন্ম হয়। তখন থেকেই আমি  সন্তানের মতো তাকে বড় করছি। পাগলু তার মায়ের দুধ খাওয়ার পর কিছু দুধ অবশিষ্ট থাকত, সেটুকু ছেলেকে খাওয়াতাম।“

পাগলুকে স্কেলে ওজন করা হয়েছে। তার ওজন প্রায় ৩৫ মণ। টিপু আশা করছেন ১৫ লাখ টাকা দাম পেলে বিক্রি করে দেবেন। তবে টিপু হতাশ হয়ে বলেন, ‘এবার হাট বসবে না। লকডাউন চলছে। তাই খুবই চিন্তায় আছি। কীভাবে বিক্রি করব। প্রতিদিন অনেকে মোবাইলে খোঁজ নেয়। কিন্তু দাম ঠিকমতো বলে না।’