গাজীপুরে জোড়া জাগুয়ার

গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে এক জোড়া জাগুয়ার। বাংলাদেশে একমাত্র জাগুয়ার জোড়া বসবাস করছে সেখানে। খুব শক্ত কাঠামোর একটি ঘরে তাদের বসবাস প্রায় চার বছর ধরে। বাধ্যতামূলক বসবাস বলতে হবে। কারণ, এরা দুরন্ত ও ক্ষিপ্র প্রাণী। এদের বসতি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলের বনে। বড় বড় গাছের মগডালে এক লাফে উঠে পড়ার ক্ষমতা আছে জাগুয়ারের।

২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর তাদের ঠাঁই হয় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের কোয়ারেন্টিন জোনে। এভাবেই এক জোড়া জাগুয়ার হয়ে যায় বাংলাদেশের।তারা এখন প্রাপ্তবয়স্ক। বাচ্চা জন্ম দিতে সক্ষম। এই জোড়া থেকে বাচ্চা পাওয়ার আশা আছে। পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান এই সুখবর দিলেন। জাগুয়ার জোড়ার ওপর দৈনন্দিন পর্যবেক্ষণের পর তাঁর ধারণা কিছুটা স্পষ্ট হয়েছে। এই পরিবেশে জাগুয়ারের ঘরে শাবক জন্ম নিলে এটি হবে একটি চমকপ্রদ ঘটনা।

শারীরিক গঠন ও রঙে অল্প কয়েকটা নিখুঁত পার্থক্য আছে এদের মধ্যে। এই তিন ধরনের প্রাণীর শরীরেই আছে ছোপ ছোপ কালো দাগ। তবে দাগগুলোর গঠনে আছে পার্থক্য। জাগুয়ারের ক্ষেত্রে গায়ের কমলা রঙের ওপর বিক্ষিপ্ত ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায়। এদের মাথাটা হয় বেশ বড়সড়।

জাগুয়ারের বসতি মূলত দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোতে। এরা বনের ভেতর নানা ধরনের ছোট প্রাণী শিকার করে খাদ্যের চাহিদা মেটায়। জাগুয়ার হলো বাঘ ও সিংহের পর তৃতীয় বৃহৎ বিড়াল প্রজাতির প্রাণী। এরা পানিতে খুব ভালোভাবে সাঁতার কাটতে জানে। থাবা মেরে এরা পানিতে মাছ, কচ্ছপসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণীও শিকার করে। এ ছাড়া এদের খাদ্যতালিকায় আছে হরিণসহ বিভিন্ন প্রাণী। জাগুয়াররা দলবদ্ধ নয়, বরং এককভাবে বসবাস করতে ভালোবাসে। এরা নির্দিষ্ট এলাকায় নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। জাগুয়ার সাধারণত একসঙ্গে চারটি পর্যন্ত বাচ্চা দেয়। জন্মের সময় ভূমিষ্ঠ হওয়া বাচ্চাগুলো চোখে দেখে না। নির্দিষ্ট সময় অন্তর এদের চোখ ফোটে।