সাপের বিষ ঘিরে প্রতারণার ফাঁদ
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতারণার নানা ফাঁদ লুকিয়ে আছে। চাকরি দেওয়ার নামে ফাঁদ, অল্পপুঁজিতে স্বল্প সময়ে বিত্তশালী হওয়ার ফাঁদ। জিনের বাদশার নামে ফাঁদ। তবে সবগুলো ফাঁদের তুলনায় সম্প্রতি সাপের বিষ নিয়ে যে ফাঁদ তৈরি হয়েছে তা চাঞ্চল্যকর। সারা দেশে বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে কোটি কোটি টাকা মূল্যের সাপের বিষ আটক করলেও নমুনা পরীক্ষার আগেই সংবাদ সম্মেলন করে বলা হচ্ছে।
সাপের বিষ রাখতে কাচের কৌটা ব্যবহার করছে প্রতারকরা। আর এসব কাচের কৌটার গায়ে লেখা থাকছে বিভিন্ন দেশের নাম ও কোড নম্বর। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি রাজধানীর রামপুরা থেকে ৮৫ কোটি টাকা মূল্যের সাপের বিষ উদ্ধার করে র্যা ব। এসময় আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের পাঁচ সদস্যও গ্রেপ্তার হয়। তখন র্যা ব জানায়, উদ্ধার হওয়া বিষগুলো ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশে আনা হয়েছিল। চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে হয়ে অন্য দেশে এই বিষ পাচার করতে চেয়েছিল চক্রটি। তবে তার আগেই রামপুরার নতুন বাগ ১ নম্বর লোহার গেট এলাকার ঘ-১ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিষগুলো আটক করে র্যাব।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কথিত বিষের জারসহ চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে গণমাধ্যমের সামনে হাজির হচ্ছে প্রায়ই। এরপর পুলিশ-র্যা ব বা সিআইডি দাবি করছে, সাপের বিষ পাচারের সঙ্গে সংশ্নিষ্টরা আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্রের সদস্য। এসব জারে কোটি কোটি টাকার বিষ রয়েছে। এরপর গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাও করা হয়। তবে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে- সাপের বিষ বিক্রির চেষ্টা, অভিযানে বিষ জব্দ, চক্রের সদস্য গ্রেপ্তার ও পরবর্তী সময়ে মামলা করার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে প্রতারণা, কারসাজি আর জালিয়াতি।
দেশের বিভিন্ন স্থানে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জব্দ করা হয়েছে কোটি টাকা মূল্যের সাপের অবৈধ বিষ। সাধারণত প্রতারণার মাধ্যমে এগুলো বিক্রি করা হয়। কিন্তু মূল্যবান বলে বিক্রি করলেও এগুলোতে সাপের বিষের কোনও বৈশিষ্ট্য নেই। লোক ঠকিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতে এগুলোকে মূল্যবান সাপের বিষ বলে গোপন প্রচারণা চালায় চোরাচালান চক্র । আর তাদের ফাঁদে পড়ে বেশি মুনাফার লোভে কেউ কেউ সাপের ভুয়া বিষ ক্রয় করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র বলছে, প্রতারক চক্র সাপের বিষ বলে যা বিক্রি করছে, আসলে তা কোনও বিষই নয়।
২০১৭ সালে ৮ মার্চ রাজধানীর ধানমণ্ডি থেকে ৪৫ কোটি টাকা মূল্যের বিষাক্ত সাপের বিষ আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। এছাড়া, ১৮ এপ্রিল রাজধানীর কুড়িল বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে মূল্যবান সাপের বিষের আরও একটি চোরাচালান চক্রকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা মূল্যের সাপের বিষ উদ্ধার করা হয়। একই অপরাধে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গত ২৪ মে বিদেশি পিস্তল, সাপের বিষসহ চারজনকে আটক করে র্যা ব-১০। তাদের কাছ থেকেও ৯টি ক্রিস্টাল জারে সাপের বিষ উদ্ধার করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যা ব সূত্রে জানা গেছে, সাপের বিষের এসব প্রতারক চক্র বিষ বিক্রি করার জন্য কৌশল অবলম্বন করে থাকে। তারা দাবি করে, এই সাপের বিষ দেশের বাইরে থেকে এসেছে, এর মূল্য কোটি টাকা। ওষুধ কোম্পানিগুলো এসব সাপের বিষ কোটি কোটি টাকা দিয়ে কেনে। কারণ বৈধভাবে দেশের বাইরে থেকে এসব আনতে হলে আরও কয়েকগুণ বেশি টাকা গুণতে হয়। কম দামের কারণে ক্রেতারা সহজে প্রতারকদের ফাঁদে পা দেয়। কিন্তু প্রতারকরা যেসব সাপের বিষ মহামূল্যবান বলে বিক্রি করে, আসলে তা সাপের বিষই না।
ভুয়া সাপের বিষ বিক্রির প্রচারক চক্ররা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। ‘ওরা বলে ফ্রান্সের তৈরি একটা পিস্তল আছে, যা দিয়ে সাপের বিষের কৌটায় ফায়ার করলে কৌটাটি ফাটবে না। বিষ নকল হলে ফেটে যাবে। আরও বলে, অরিজিনাল বিষ স্বচ্ছ কাঁচের জারে রাখার পর এর ওপর লেজার লাইট ধরলে একপাশ থেকে অন্য পাশে যাবে না। বিভিন্ন গাইড বইও দেখায়। যেগুলোতে বিষ কোথা থেকে নেওয়া হয়েছে, কিভাবে ব্যবহার করতে হবে, সেসব লেখা থাকে। আর এসবই প্রতারণার অংশ, সবকিছুই ভুয়া।সাপের বিষ ঘিরে প্রতারণার ফাঁদ
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতারণার নানা ফাঁদ লুকিয়ে আছে। চাকরি দেওয়ার নামে ফাঁদ, অল্পপুঁজিতে স্বল্প সময়ে বিত্তশালী হওয়ার ফাঁদ। জিনের বাদশার নামে ফাঁদ। তবে সবগুলো ফাঁদের তুলনায় সম্প্রতি সাপের বিষ নিয়ে যে ফাঁদ তৈরি হয়েছে তা চাঞ্চল্যকর। সারা দেশে বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে কোটি কোটি টাকা মূল্যের সাপের বিষ আটক করলেও নমুনা পরীক্ষার আগেই সংবাদ সম্মেলন করে বলা হচ্ছে।
সাপের বিষ রাখতে কাচের কৌটা ব্যবহার করছে প্রতারকরা। আর এসব কাচের কৌটার গায়ে লেখা থাকছে বিভিন্ন দেশের নাম ও কোড নম্বর। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি রাজধানীর রামপুরা থেকে ৮৫ কোটি টাকা মূল্যের সাপের বিষ উদ্ধার করে র্যা ব। এসময় আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের পাঁচ সদস্যও গ্রেপ্তার হয়। তখন র্যা ব জানায়, উদ্ধার হওয়া বিষগুলো ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশে আনা হয়েছিল। চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে হয়ে অন্য দেশে এই বিষ পাচার করতে চেয়েছিল চক্রটি। তবে তার আগেই রামপুরার নতুন বাগ ১ নম্বর লোহার গেট এলাকার ঘ-১ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিষগুলো আটক করে র্যাব।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কথিত বিষের জারসহ চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে গণমাধ্যমের সামনে হাজির হচ্ছে প্রায়ই। এরপর পুলিশ-র্যা ব বা সিআইডি দাবি করছে, সাপের বিষ পাচারের সঙ্গে সংশ্নিষ্টরা আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্রের সদস্য। এসব জারে কোটি কোটি টাকার বিষ রয়েছে। এরপর গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাও করা হয়। তবে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে- সাপের বিষ বিক্রির চেষ্টা, অভিযানে বিষ জব্দ, চক্রের সদস্য গ্রেপ্তার ও পরবর্তী সময়ে মামলা করার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে প্রতারণা, কারসাজি আর জালিয়াতি।
দেশের বিভিন্ন স্থানে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জব্দ করা হয়েছে কোটি টাকা মূল্যের সাপের অবৈধ বিষ। সাধারণত প্রতারণার মাধ্যমে এগুলো বিক্রি করা হয়। কিন্তু মূল্যবান বলে বিক্রি করলেও এগুলোতে সাপের বিষের কোনও বৈশিষ্ট্য নেই। লোক ঠকিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতে এগুলোকে মূল্যবান সাপের বিষ বলে গোপন প্রচারণা চালায় চোরাচালান চক্র । আর তাদের ফাঁদে পড়ে বেশি মুনাফার লোভে কেউ কেউ সাপের ভুয়া বিষ ক্রয় করেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র বলছে, প্রতারক চক্র সাপের বিষ বলে যা বিক্রি করছে, আসলে তা কোনও বিষই নয়।
২০১৭ সালে ৮ মার্চ রাজধানীর ধানমণ্ডি থেকে ৪৫ কোটি টাকা মূল্যের বিষাক্ত সাপের বিষ আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। এছাড়া, ১৮ এপ্রিল রাজধানীর কুড়িল বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে মূল্যবান সাপের বিষের আরও একটি চোরাচালান চক্রকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা মূল্যের সাপের বিষ উদ্ধার করা হয়। একই অপরাধে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গত ২৪ মে বিদেশি পিস্তল, সাপের বিষসহ চারজনকে আটক করে র্যা ব-১০। তাদের কাছ থেকেও ৯টি ক্রিস্টাল জারে সাপের বিষ উদ্ধার করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যা ব সূত্রে জানা গেছে, সাপের বিষের এসব প্রতারক চক্র বিষ বিক্রি করার জন্য কৌশল অবলম্বন করে থাকে। তারা দাবি করে, এই সাপের বিষ দেশের বাইরে থেকে এসেছে, এর মূল্য কোটি টাকা। ওষুধ কোম্পানিগুলো এসব সাপের বিষ কোটি কোটি টাকা দিয়ে কেনে। কারণ বৈধভাবে দেশের বাইরে থেকে এসব আনতে হলে আরও কয়েকগুণ বেশি টাকা গুণতে হয়। কম দামের কারণে ক্রেতারা সহজে প্রতারকদের ফাঁদে পা দেয়। কিন্তু প্রতারকরা যেসব সাপের বিষ মহামূল্যবান বলে বিক্রি করে, আসলে তা সাপের বিষই না।
ভুয়া সাপের বিষ বিক্রির প্রচারক চক্ররা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। ‘ওরা বলে ফ্রান্সের তৈরি একটা পিস্তল আছে, যা দিয়ে সাপের বিষের কৌটায় ফায়ার করলে কৌটাটি ফাটবে না। বিষ নকল হলে ফেটে যাবে। আরও বলে, অরিজিনাল বিষ স্বচ্ছ কাঁচের জারে রাখার পর এর ওপর লেজার লাইট ধরলে একপাশ থেকে অন্য পাশে যাবে না। বিভিন্ন গাইড বইও দেখায়। যেগুলোতে বিষ কোথা থেকে নেওয়া হয়েছে, কিভাবে ব্যবহার করতে হবে, সেসব লেখা থাকে। আর এসবই প্রতারণার অংশ, সবকিছুই ভুয়া।